ধলাই ডেস্ক: সারাদেশে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পাবনা, সুনামগঞ্জ, নওগাঁ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা ও পটুয়াখালীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘটনাগুলো ঘটে। এরমধ্যে শুধু নরসিংদী জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। এসব জেলায় বজ্রপাতের ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১৭ জন।
নরসিংদীতে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে এক নারীসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ মে) জেলার রায়পুরা, মনোহরদী, শিবপুর ও জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন- রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরের চর গ্রামের মোমরাজ মিয়ার স্ত্রী সামসুন নাহার (৪৫), নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে জাবেদ মিয়া (১২) ও মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পাতরদিয়া গ্রামের মৃত বাদল মিয়ার ছেলে প্রবাস ফেরত রায়হান মিয়া (২৫), শিবপুরের দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩০), নরসিংদী শহরের পশ্চিমকান্দা পাড়া মহল্লার শুকমার রায়েল ছেলে শুপ্তকর (১৪)।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও বাঞ্ছারামপুরে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলার নাসিরনগর ও বাঞ্ছারামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত মোজ্জামেল হক জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউপির সোনাতলা গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে ও বাঞ্চারামপুর উপজেলার মানিকনগর ইউপির মায়ারামপুর এলাকার আব্দুল কাদিরের ছেলে মিনু মিয়া। বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যুর বিষয়টি পৃথকভাবে নিশ্চিত করেছেন নাসিরনগরের ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম ও বাঞ্ছারামপুরে ইউএনও এ কে মিত্র চাকমা।
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বজ্রপাতে মো. রুমিজ ও শাকিল নামে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় আহত হয়েছেন শিক্ষার্থীসহ ১৪ জন। মৃত দুই কৃষক সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। রুমিজ ও শাকিল পার্শ্ববর্তী চাটমোহর উপজেলার সাইকোলা নদীপাড়া এলাকার মনি মাঝি ও মমিন হোসেনের ছেলে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের পাঁচ বেতনয়ান গ্রামের মাঠের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, মরদেহ পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় বজ্রপাতে ওমর ফারুক নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ধর্মপাশা জয়শ্রী ইউনিয়নের সিমেরখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত ওমর ফারুক বাদেহরিপুর গ্রামের মো. আলিম উদ্দিনের ছেলে। সে জয়শ্রী উচ্চবিদ্যালয় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আহতরা হলেন, কালাচাঁন মিয়া (৬৫), আবুল কাশেম (৫০) ও শাহীন (১৩)।
নওগাঁর রাণীনগরে ক্ষেত থেকে ভুট্টা উঠানোর সময় বজ্রপাতে জামিল হোসেন (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত জামিল হোসেন একই গ্রামের মৃত আজাদ হোসেনের ছেলে। রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বজ্রপাতে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুইন্দা খলাপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে কাজী জিল্লুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মৃত জিল্লুর ভৈরব পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার মৃত কাজী গোলাপ মিয়ার ছেলে। তিনি পৌর শহরের জগন্নাথপুর লক্ষ্মীপুর মাক্কু মোল্লা ফুড কারখানায় চাকরি করতেন।
অন্যদিকে, নেত্রকোণার মদনে হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে জয়নাল আবেদীন (৪৩) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাগজান গ্রামের সামনের হাওরে মাছ ধরতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। মৃত জয়নাল বাগজান গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। মদন থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে।
পটুয়াখালীর দশমিনায় বজ্রপাতে আব্দুর রব হাওলাদার (৫৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আব্দুর রব হাওলাদার কাটাখালী গ্রামের মরহুম আলী হাওলাদারের ছেলে। সদর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. অলিউল ইসলাম হাওলাদার বজ্রপাতে মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…