শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে কমলগঞ্জে পূজার কেনাকাটা

প্রকাশিত: ৪:১৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০২৪

আশরাফ সিদ্দিী পারভেজ: পারভেজ আহমেদ, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: আগামী বুধবার (০৯ অক্টোবর) থেকে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ইতিমধ্যে উৎসবের আমেজ লেগেছে বিভিন্ন পূজামন্ডপে। আর এ উৎসব রাঙাতে, পূজায় নিজেকে রঙিন পোশাকে সাজাতে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা।

ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মার্কেট, শপিং মল। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরের আল-আমীন প্লাজা, আফরোজ উদ্দিন মার্কেট, আসিদ আলী মার্কেট সহ ১০নং রোডে বেশ কয়েকটি মার্কেটে চলছে জমজমাট বেচাকেনা।

পূজা উপলক্ষে কাপড়ের দোকানে নারীদের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন রংয়ের থ্রি-পিস, জামদানি শাড়ি, কাতান শাড়ি, লেহেঙ্গা ও তাঁতের শাড়ি। ছেলেদের জন্য রয়েছে বাহারি ডিজাইনের পাঞ্জাবি, ধুতি, শার্ট, টি-শার্ট, জিন্স প্যান্ট। তাছাড়াও জুতার দোকানগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের জুতা। রয়েছে বাচ্চাদের বাহারি পোশাক। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সী ক্রেতারাই পছন্দসই পোশাকের খোঁজে ঢুঁ মারছেন বিপণিকেন্দ্রগুলোতে।

দোকানিরা জানান, এবার বেশ ভালই বিক্রি হচ্ছে। গতবারের তুলনায় এবার ভালো ক্রেতা পাচ্ছি। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসছে, শেষমূহুর্তে বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা তাদের।

পৌর শহরের ভানুগাছ বাজারে শপিং করতে আসা অনিতা রাণী নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘মা দুর্গাকে বরণ করতে লাল-সাদার সনাতনী সাজ অবশ্যই থাকবে। তবে তাতে আধুনিকতার ছোঁয়াও থাকা চাই।’ সে অনুযায়ীই তিনি কিনলেন লাল-সাদা জামদানি শাড়ি।

আফরুজ উদ্দিন মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা অশিষ কুমার তিনি জানান, স্ত্রীর জন্য লাল-সাদা শাড়ি কিনেছেন এবং নিজের জন্য গাঢ় নীল রঙের ফতুয়া ও জিনস প্যান্ট কিনেছেন।

দোকানি ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের পূজার বাজারে মেয়েদের শাড়ি, থ্রি-পিছ, টপ চাহিদা বেশি। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কাতান, কাঞ্চিবরণ, মিঠাই, ভয়েল, সাদা শাড়ি লাল পাই শাড়ির প্রতি আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রে এবার পাঞ্জাবি, ফতোয়া, কাতোয়া, জিন্স প্যান্ট বেশ চলছে। অনেকে পাঞ্জাবির সঙ্গে পরার জন্য পূজার আমেজের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন ধুতিও।

পৌর শহরের ‘মা ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী সুখেন্দ্র দেবনাথ জানান, পূজায় প্রতিবারের মতো এ বছরও শাড়ির চাহিদাই বেশি। এ ছাড়া তরুণীরা থ্রি-পিছ, টপ, সালোয়ার-কামিজ ও ছেলেরা পাঞ্জাবি ও ফতুয়া কিনছেন। বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে।

ভানুগাছ বাজারের ১০নং রোডের বিচিত্রা কসমেটিকসের মালিক বলেন, কসমেটিকসের কেনাকাটা সারা বছরই চলে। এখনও চলছে। তবে পূজা ঘিরে চাহিদা বাড়ে, এটাই স্বাভাবিক। আলহামদুলিল্লাহ বিক্রি ভালই হচ্ছে।

পৌর শহরের পাল বস্ত্রালয়ের মালিক বলেন- আমাদের এখানে পুরুষদের চাইতে মহিলা ক্রেতাই বেশি আসছে। বিক্রিও বেশ ভালোই হচ্ছে। আমাদের দোকানে সব ধরণের পোষাক পাওয়া যাচ্ছে। মনে হচ্ছে অন্য বারের তুলনায় বেচা-বিক্রি বেশি হবে।

মাধবপুর থেকে পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা বিশ্বজিৎ কুমার জানান, পোশাকের দাম কিছুটা বাড়তি। তবুও উৎসব উপলক্ষে কেনাকাটা তো করতেই হবে। তিনি বলেন, গতকাল মা-বাবার জন্য কেনাকাটা করেছি। আজ স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে এসেছি, স্ত্রীর জন্য একটি কাতান শাড়ি কিনেছি, ছেলের জন্য প্যান্ট-শার্ট ও আমার জন্য একটি পাঞ্জাবী কিনবো।

কসমেটিকসের দোকানগুলোতেও চলছে জমজমাট কেনাকাটা। মেয়েরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন চুড়ি, গলার হার, আংটি সহ নানা রকম অলঙ্কার। পোশাকের পাশাপাশি মেয়েদের জুয়েলারি, সিঁদুর, চুড়িসহ অন্যান্য অনুষঙ্গ বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে বলে জানান দোকানিরা।

ভানুগাছ পৌর বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি জনাব মামুনুর রশিদ জানান, আলহামদুলিল্লাহ আমাদের পৌর শহরের ভানুগাছ বাজারে জমজমাট কেনাবেচা চলছে। শপিং মল, মার্কেটে অনেক বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে অন্য বারের তুলনায় বেচা-বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। বাজারের ব্যবসায়ী এবং বাজারে আসা ক্রেতাদের কোন ধরণের সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের ভানুগাছ বাজার পৌরবণিক সমিতির সদস্যরা সব সময় পর্যবেক্ষণ করছি।