ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ‘জাতীয় মৎস্য পুরস্কার ২০১৯’ এর স্বর্ণপদক অর্জন করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরীর হাতে এ স্বর্ণপদক তুলে দেন।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, অনুষ্ঠান শেষে নৌ সদর দফতরে এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পরিচালক নৌ অপারেশন্স কমডোর মাহমুদুল মালেক। এ সময় তিনি দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায় নৌবাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রমসমূহ তুলে ধরেন।
আইএসপিআর জানায়, দেশের অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় সারাবছর বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের ‘অপারেশন জাটকা’ এবং ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান’ পরিচালনার করে। এর ফলে গত ১০ বছরে ইলিশ উৎপাদনের গড় প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
পৃথিবীর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের অধিক ইলিশ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। গত ২০০৮-৯ সালে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৩ দশমিক ১৩ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৭-১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১৭ লাখ মেট্রিক টনে। যা দেশের মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ। যার বাজার মূল্য ২০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের জিডিপিতে ইলিশ মাছের অবদান প্রায় শতকরা ১ ভাগ। নৌবাহিনীর অভিযানের ফলে ইলিশের এ উৎপাদন বৃদ্ধি হয়েছে এবং দেশের বাজারে ইলিশের প্রাচুর্যের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে।
২০০১ সাল থেকে ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৫ থেকে ৭টি জাহাজ দেশের অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকে। গত অর্থ বছরে (২০১৮-১৯) নৌবাহিনী জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চালিয়ে ৩৩৮ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ জাল, নৌকা ও পোনা উদ্ধার করে। ২০০৩ সালেও জাতীয় মৎস পুরস্কার-স্বর্ণপদক পায় নৌবাহিনী।
এছাড়া, ২০০১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নৌবাহিনী ‘অপারেশন জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান’ চালিয়ে ৭৩ কোটি ৯৫ হাজার ৪২২ মিটার অবৈধ জাল, ২৫৮ টি নৌকা, ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৫০ কেজি জাটকা ও ১১ লাখ ৫০ হাজার রেনু পোনা উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ৪৮ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ টাকা।