খাবারের হাহাকার, সাড়ে ৯ লাখ বানভাসির দুর্ভোগ এখন চরমে

প্রকাশিত: ৭:৫৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০১৯

ডেস্ক রিপোর্ট: কুড়িগ্রাম জেলার সাড়ে ৯ লাখ বানভাসির দুর্ভোগ এখন চরমে। বন্যায় এত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী নেই। পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসিরা। রাস্তায়, রেলওয়ে স্টেশন ও বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে বন্যাদুর্গত মানুষ। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। সব মিলে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে সাড়ে নয় লাখ বানভাসি।

জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়, বন্যার কারণে তিনটি পৌরসভাসহ ৬০টি ইউনিয়নের ৮৯৪টি গ্রামের দুই লাখ ৩৮ হাজার ৬৭২টি পরিবার পানিবন্দি। প্রতি পরিবারের চারজন বানভাসি। সে হিসাবে বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা নয় লাখ ৫৪ হাজার ৬৮৮। বন্যায় পানিবন্দি হয়ে এসব মানুষ গত ১০ দিন ধরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এদের মাঝে দেখা দিয়েছে খাবারের হাহাকার। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট পাশাপাশি রয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ।

সেই সঙ্গে বন্যায় ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩ হাজার হেক্টর। এক হাজার ২৪৫ কিলোমিটার রাস্তা, ৪০ কিলোমিটার বাঁধ ও ৪১টি ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নয় হাজার ৭৩৪টি। দুই লক্ষাধিক গবাদিপশু পানিবন্দি রয়েছে। বন্যার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজ মিলে এক হাজার ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে ৮০০ টন চাল, ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সাত হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছয় হাজার ৪২৮ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যায় নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার করে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বানভাসিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পাঁচ হাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনি, চিড়া, গুড়, মুড়ি, নুডলস, বিস্কুট, পানি ও স্যালাইনসহ একটি করে ত্রাণের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।

অপরদিকে জেলা পরিষদের উদ্যোগে ১০ লাখ টাকার শুকনা খাবার, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কর্তৃক চিলমারীতে ৫০০ পরিবারকে সাড়ে চার হাজার টাকা করে ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ডব্লিউএফপি কর্তৃক সদর উপজেলায় এক হাজার ২৫১টি, উলিপুরে ৮৫৫টি এবং চিলমারীতে দুই হাজার ৩০৮টি পরিবারকে সাড়ে চার হাজার করে এক কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।