পরকীয়া করায় স্ত্রীর হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেললেন স্বামী

প্রকাশিত: ৯:৪৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
প্রতিকী ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট: নরসিংদীতে পরকীয়া করায় স্ত্রীর হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেললেন বিষ্ণু সূত্রধর নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় গ্রেফতার বিষ্ণু সূত্রধর বুধবার বিকেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। স্ত্রীর পরকীয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে আদালতে জানিয়েছেন।

গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে স্ত্রী দীপা চন্দ্র সূত্রধরের (২৭) হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেন স্বামী বিষ্ণু সূত্রধর।এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে দীপার ছোট ভাই রাজীব চন্দ্র সূত্রধর বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় বিষ্ণু সূত্রধরকে আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন। পরে ওইদিন রাতেই পুলিশ বিষ্ণু সূত্রধরকে গ্রেফতার করে।

আহত দীপা চন্দ্র সূত্রধর নরসিংদী পৌর শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়া এলাকার বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত সদস্য দিলীপ সূত্রধরের মেয়ে। তার স্বামী বিষ্ণু সূত্রধরের বাড়ি কুড়িগ্রামে।

তবে আহত দীপার পরিবারের দাবি, সম্প্রতি দীপার বাবা দিলীপ সূত্রধর বিজিবির সদস্য পদ থেকে অবসর নিয়ে পেনশনের কিছু টাকা পেয়েছেন। শ্বশুরের সেই টাকার প্রতি লোভ জন্মায় বিষ্ণুর। সম্প্রতি তিনি ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু দীপা এ কথা বাবাকে বলতে অস্বীকৃতি জানান। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিষ্ণু তার শ্বশুরবাড়ি নরসিংদীর পশ্চিম কান্দাপাড়ায় আসেন। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে পরিবারের সবার সঙ্গে রাত ১টা পর্যন্ত আড্ডা দেন। রাত ৩টার দিকে আকষ্মিক বিষ্ণু চাপাতি দিয়ে তার স্ত্রী দীপার ডান হাতের বাহু থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ সময় দীপা চিৎকার দিলে চাপাতির কোপ মুখের ডান গালে ও বাম হাতে লাগে। এতে গালের মাংসও কেটে যায়।

চিৎকার শুনে বাবা দিলীপ সূত্রধর, মা অরুণা সূত্রধর ও ভাই রাজিব সূত্রধর এসে দীপাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ও পরে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা নেয়ার পর বর্তমানে তাকে ঢাকা হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত দীপা সূত্রধর বলেন, ঘুমের মধ্যে হঠাৎ বিষ্ণু চাপাতি দিয়ে আমার হাত কেটে ফেলে। তারপর সে আমাকে জবাই করতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি। সেই আঘাতই আমার গালে ও বাম হাতে কোপ লেগেছে। বিষ্ণু আমাকে খুন করার পর আমার দুই ছেলে মেয়েকেও খুন করত।

দীপার ছোট ভাই ও মামলার বাদী রাজীব সূত্রধর বলেন, রাত ১টা পর্যন্ত দিদি ও জামাইবাবুর সঙ্গে আমি আড্ডা দেই। রাত ৩ টায় দিদির চিৎকারের শব্দ শুনে গিয়ে দেখি জামাইবাবু দিদির ডান হাত কেটে ফেলে দিয়েছে।

ঢাকা হেলথ কেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শরীফ বলেন, আহত দীপার ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া তার মুখের ডান পাশে লম্বালম্বিভাবে মাংস আলাদা হয়ে গেছে। আর বাম হাতেও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।

নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন বলেন, এ ঘটনায় আহতের ছোট ভাই রাজীব সূত্রধর বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। বুধবার স্বামী বিষ্ণু রায়কে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামান বলেন, বুধবার বিকেলে গ্রেফতার বিষ্ণু সূত্রধর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। স্ত্রীর পরকীয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে।