ধলাই ডেস্ক: হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররম। এ মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। নানা কারণে পরিচিত ঐতিহাসিক আশুরা উপলক্ষ্যে অনেক উৎসব পালিত হয়ে থাকে। আশুরায় রোজা পালন, বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিবার-পরিজনের জন্য দোয়া এবং স্বাভাবিক নফল-ইবাদত বন্দেগির বাইরে অন্য কোনো রুসুম রেওয়াজের ধারা অব্যাহত রাখা বৈধ নয়। এমনকি কিছু কিছু রুসম-রেওয়াজ পালন করা নিষিদ্ধও বটে।
আশুরায় রোজা ও অন্যান্য সময়ের মতো নফল ইবাদত-বন্দেগি ছাড়া বিশেষ কোনো ইবাদত-বন্দেগি কিংবা রুসুম রেওয়াজের দিকনির্দেশনা নেই। আশুরাকে উপলক্ষ্য করে যেসব কাজ ও ইবাদতে ইসলামের নির্দেশনা নেই, তাহলো-
– আশুরা উপলক্ষ্যে রণ-প্রস্তুতির মহড়া প্রদর্শন;
– আশুরা উপলক্ষ্যে সাজ-সজ্জা প্রদর্শন;
– আশুরা উপলক্ষ্যে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা।
এছাড়াও – আশুরা উপলক্ষ্যে শোক পালন, তাজিয়া মিছিল, বিশেষ কোনো নির্ধারিত নামাজ ও নির্ধারিত কোনো দোয়া পড়ায় ইসলামের নির্দেশনা নেই।
তারপরও আশুরা উপলক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী কিছু সংগঠন ও ব্যক্তি বিশেষ উল্লেখিত রুসুম রেওয়াজগুলো উদযাপন করে থাকেন। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিকোন থেকে কিংবা কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মোতাবেক এসবের কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই।
তবে আশুরা উপলক্ষ্যে রোজা রাখার ব্যাপারে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। তাছাড়া রোজা রাখার দিনক্ষণ সম্পর্কেও রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা। আর তাহলো-
– আশুরার নফল রোজা মহররম মাসের ১০ তারিখ পালন করা সুন্নাত। এ দিন রোজা পালনকারীর বিগত বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয় বলে ঘোষণা করেছেন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
– সাহাবায়ে কেরাম যখন বিশ্বনবিকে জানালেন যে, ইয়াহুদিরাও এ দিন আশুরা উপলক্ষ্যে রোজা পালন করেন। তখন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, তবে আমরা মহররমের নবমিতেও তথা ৯ তারিখও আমরা রোজা রাখব। সে হিসেবে ৯ ও ১০ মহররম রোজা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম।
তবে-
ইয়াহুদিদের অনুসরণ ও অনুকরণ থেকে নিজের বিরত রাখতে অনেকে নবমিতে রোজা রাখতে না পারলে আশুরার পরের দিন রোজা পালন করে থাকেন। আর তাতে দুইটি রোজা পালন করা হয।
সেক্ষেত্রে-
– ৯ ও ১০ মহররম রোজা রাখলে হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা পালন হয়ে যায়।
– ৯ তারিখ রোজা রাখতে না পারলে ১০ ও ১১ মহররম রোজা পালনের মাধ্যমে ইয়াহুদিদের অনুসরণ থেকে বিরত থাকা যায়। আর এ কারণে অধিকাংশ ইসলামিক স্কলাররা আশুরার পরের দিন রোজা পালন করাকে বৈধ বলে মত দিয়েছেন। তবে উত্তম হলো ৯ ও ১০ মহররম রোজা পালন করা।
– তবে কেউ কেউ ৯-১১ মহররম এ তিনদিন রোজা পালনের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আশুরায় ইবাদত-বন্দেগি মনে করে রুসুম রেওয়াজ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে নিজেদের বিরত রাখার পাশাপাশি হাদিসের নির্দেশনা মোতাবেক রোজা পালন করার তাওফিক দান করুন। শোহাদায়ে কারবালাসহ আশুরায় ঘটে যাওয়া সব ঘটনার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা ও আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সূত্র: জাগো নিউজ…