কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার সীমান্ত দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদকদ্রব্য পাচারের পথ হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ভারত থেকে এসব বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে মাদক এনে পাচারকারীরা সড়কপথে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে। সম্প্রতি পুলিশের বিশেষ শাখা অভিযান চালিয়ে ১১৮ পিস ইয়াবাসহ এক পাচারকারীকে আটক করে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর ও কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চোরাইপথে মাদকদ্রব্য ও নিষিদ্ধ ভারতীয় বিড়ি আসছে। এগুলো বাংলাদেশে এনে চাতলাপুর থেকে কানিহাটি, শমশেরনগর, নছিরগঞ্জ, হাজীপুর ও কুরমা থেকে আদমপুর এলাকা দিয়ে প্রতিদিনি বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদক চোরাচালানীরা বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে।
মাদকের মধ্যে ফেনসিডিল, অফিসার চয়েস, কোরেক্স, নেশা জাতীয়, ইয়াবা টেবলেট এনে পাচারকারীরা সিএনজি-অটোরিক্সা, ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, ভ্যান ও রিকশাযোগে পাচার করছে। পুরুষের পাশাপাশি কোন কোন সময়ে নারীদেরও ব্যবহার করছে চোরাচালানীরা। নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে তারা মাদক পাচার করছে।
গোপন সংবাদ পেয়ে গত ২৯ জুন সোমবার সন্ধ্যায় শমশেরনগর মোকামবাজার ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সায় পাচারকালে শরীফপুর ইউনিয়নের নমৌজা গ্রামের ফয়সাল আহমেদ টিটু (৩২) কে ১১৮ পিস ইয়াবাসহ ডিবি পুলিশ আটক করে। ফয়সাল গ্রমের মনাফ মিয়ার ছেলে। জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায়ের নেতৃত্বে ইয়াবাসহ এক ব্যক্তিকে আটক করে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়কে প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, সিএনজি-অটোরিক্সা ও রিক্সা যোগে সেবনকারী ও পাচারকারীদের ব্যাপক তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। শমশেরনগর কানিহাটি ও চাতলাপুর চা বাগানের কয়েকজন শ্রমিক জানান, বিকালে, সন্ধ্যা ও রাতে তাদের বাগানের আনাচে কানাচে গাড়ি থামিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে অনেকেই মাদক সেবন করে চলে যান।
আবার কেউ কেউ এসব স্থানে বেচাকেনাও করেন। মাদকদ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় অনেক অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন। কলেজ শিক্ষক জমশেদ আলী ও ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচারের রুট হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ায় এখানকার অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওসি (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সংবাদ পেলেই তাদের আটক করে মামলা দিচ্ছে।