
ধলাই ডেস্ক: কিশোরগঞ্জে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সদর মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত শ্যামল মিয়াকে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে জেলা শহরের বত্রিশ মনিপুর ঘাট এলাকায় শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর আখড়ায় দুর্বৃত্তরা প্রতিমা ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা যায় নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, এই আখড়ায় প্রথমবারের মতো দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। রাতে নিরাপত্তার কারণে পাহারায় ছিলেন স্থানীয় গোপীনাথ সংঘের ছেলেরা। রাত চারটা পর্যন্ত সংগঠনের পাঁচ সদস্য জেগে ছিলেন। এরপর থেকে ভোর পাঁচটার মধ্যে দুর্বৃত্তরা প্রতিমা ভাঙচুর করে।
নিরাপত্তার স্বার্থে পূজা উপলক্ষে মন্দিরে সিসি ক্যামেরা বুধবার লাগানোর কথা থাকলেও বৃষ্টির জন্য তা লাগানো হয়নি।
এ ছাড়াও সনাতনীদের ধর্মীয় উপসনালয়গুলোতে নিরাপত্তার জন্য গত দুই মাস ধরে পাহারা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা যায়।
এলাকার স্থানীয় ও আখড়ার লোকজন বলেন, পূজার বাকি মাত্র সাত দিন। ৫ আগস্টের পর থেকে কিশোরগঞ্জে রাতে হিন্দু-মুসলিম মিলে শহরের মন্দির, আখড়াগুলো পাহারা দেওয়া হয়। দিনে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন পাহারা দেয়। সারারাত বৃষ্টিতে প্রতিমা পাহারা দিলেও ভোরে কে বা কারা ভাঙচুর করে গেছে তা আমরা জানতে পারিনি।
এলাকাবাসীসহ গোপীনাথ মন্দির পূজা উদযাপন কমিটি প্রশাসন ও বর্তমান সরকারের কাছে এর বিচার দাবি করেছেন।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, প্রতিমা ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা অপু সাহা জানান, এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ধার্মিক ভালো কিন্তু ধর্মান্ধ হওয়া খুব খারাপ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশের মধ্যে এটা কখনো সমর্থন করি না।
এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর আখড়া পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরি, র্যাব ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধতন কর্মকর্তারা।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, আমরা এ ঘটনার তদন্ত করছি। এ বিষয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমি বসেছি। দুষ্কৃতিকারী যেই হউক না কেনো আইনের আওতায় আনা হবে।