ষ্টাফ রিপোর্টার: গঙ্গা স্নান,পূজার্চ্চনা ও মহাপ্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের চা শ্রমিকদের ২০ তম কাত্যায়ানী পূঁজা। এই দিনটি উপলক্ষে উপজেলার মাধবপুর চা বাগান সনাতনী ভক্তবৃন্দের আয়োজনে কার্তিক মাসব্যাপী ব্রত পালন শেষে গভীর রাত থেকে বাগানের বিভিন্ন মন্দিরে নাম কীর্তন শুরু হয় এবং ৩০ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে বিভিন্ন চা বাগানের কয়েক হাজার ভক্তরা গঙ্গা স্নান ও পূজার্চ্চনা করতে মাধবপুরের হীরামতি এলাকায় ধলাই নদীর তীরে সমবেত হয়। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গঙ্গা স্নান ও পূজার্চ্চনা চলে সকাল আট টা পর্যন্ত।
৩০ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে চা শ্রমিকদের কাত্যায়নী পূজা আয়োজক কমিটির আমন্ত্রণে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন, মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু, কমলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আসহাবুজ্জামান শাওন, চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক সীতারাম বীন, ইউপি সদস্য কৃষ্ণলাল দেশওয়ারা,সুচিত্রা বালা নুনিয়া, মাধবপুর চা বাগানের টিলাক্লার্ক কংকন ছত্রী, সাবেক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি দেওনারায়ন পাশি প্রমুখ। গঙ্গা পূজা উযয়াপন কমিটির সভাপতি শ্যামদাস পানিকা, সহ-সভাপতি সত্যনারায়ণ ভর, সাধারন সম্পাদক প্রতাপ ভর, অর্থ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ মুন্ডা, ইন্দ্রজিৎ নুনিয়া, সদস্য দাদু কাহার, নিমাই নুনিয়া ও শিউনারায়ণ নুনিয়ার সাথে আলাপকালে জানা যায়, ভগবত পুরাণ গ্রন্থের দশম স্কন্দের দ্বাবিংশ অধ্যায়ে কাত্যায়ানী ব্রতের উল্লেখ আছে। এই কাহিনী অনুযায়ী, ব্রজের গোপীগণ কৃষ্ণকে পতিরূপে কামনা করে সমগ্র মাঘ মাস জুড়ে এই ব্রত করেন। এই একমাস তারা কেবলমাত্র মশলাবিহীন খিচুড়ি ও সিদ্ধজাত খাবার খেতেন এবং সকাল বেলা নদীতে স্নান করে নদীতীরে মাটির কাত্যায়ানী মূর্তি গড়ে দেবীর পূজা করা হয়।
এরপরই নদীতে স্নান করে ভক্তরা বাড়ী ফিরে যান। মনোমতো স্বামী প্রার্থনায় গত এক মাস ব্যাপী উপবাস করে কাত্যায়ানী ব্রত পালন করা হয়েছে। এই একমাস তাকে চন্দন, ধূপ, দ্বীপ ইত্যাদি দিয়ে পূজা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে স্নান করে ভিজা কাপড়ে খোদিত কাত্যায়নীর মূর্তির সামনে চন্দন, দ্বীপ, ফল, পান, নবপত্র, মালা ও ধূপ দিয়ে পূজা করেন হাজার হাজার চা শ্রমিক ভক্তরা। পরে উপস্থিত সকল ভক্তবৃন্দের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০ বছর যাবত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। তবে এবার কোভিট-১৯ এর কারণে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার জন্য সরকারি বিধি থাকায় অনুষ্ঠানটি সীমিত আকারে পালন করা হয়েছে।