ধলাই ডেস্ক: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীর বিয়ে দেয়ার ঘটনায় নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩০ মে) বিকেলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোরশেদ আলম চারজনের নাম উল্লেখ এ ঘটনায় মামলা করার পর তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মিয়ার মধ্যস্থতায় তার বাড়িতে সহপাঠী নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীর বিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় তার বাড়িতে বাল্যবিয়ে হলেও চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়নি। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, নাছরিন আক্তার (১৪) উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নের জামাল উদ্দিনের মেয়ে ও আল আমিন (১৫) চর কালকিনি ইউনিয়নের রুহুল আমিনের ছেলে। তারা চর শামছুদ্দিন জাহেরিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বলিরপুল বাজার এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মিয়ার বাসায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের দেনমোহর ধার্য করা হয় ৭ লাখ টাকা।
চর শামছুদ্দিন জাহেরিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ফরিদ উদ্দিন আক্তার জানান, আল আমিন ও নাসরিন তার মাদরাসার শিক্ষার্থী। আল আমিন ২০১৯ সালের জেডিসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আল আমিনের সঙ্গে সহপাঠী নাছরিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঈদের দিন (২৫ মে) তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ আলীকে জানান স্বজনরা। উভয় পক্ষের সম্মতিতে ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
মামলার বাদী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোরশেদ আলম জানান, বাল্য বিয়ের অপরাধে নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ চারজনের নামে মামলা করা হয়েছে । শুনেছি, বিয়েটি ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মিয়ার বাড়িতে হয়েছে। কিন্তু নিকাহ রেজিস্ট্রার কাবিননামায় বিয়ের স্থান বরের বাড়ি উল্লেখ করেছে। কনে কোথায় থাকবে এ নিয়ে পরামর্শ নিতে অনুমতির জন্য চেয়ারম্যানের বাড়িতে এসেছিল তারা। এজন্য চেয়ারম্যানকে আইনের আওতায় আনা যায়নি।
এ ব্যাপারে কমলনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আবছার বলেন, বাল্য বিয়ের ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামি কনে নাছরিনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।