জেনে নিন রাসূলের (সা.) রওজা মোবারকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

প্রকাশিত: ৬:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২০

ধর্ম ডেস্ক: সৌদি আরবের মদিনা মুনাওয়ারা শহরের মসজিদে নববীতে প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) এর রওজা মোবারক অবস্থিত।

সবুজ গম্বুজের ছায়াতলে অবস্থিত তাঁর রওজার চতুর্দিকে সুরক্ষিতভাবে বেষ্টনী দেয়া। কোনো জিয়ারতকারীর সরাসরি তা দেখার সুযোগ নেই।

রাসূল (সা.) এর রওজা জিয়ারত করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মুসলমান ছুটে আসেন।

রাসূল (সা.) এর রওজার বর্তমান অবস্থা কেমন ও কীভাবে তা সাধারণ জিয়ারতকারীদের থেকে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে, সে সম্পর্কে ৬টি তথ্য দেয়া হলো-

> প্রবেশপথে সোনালি গ্রিলের বেষ্টনী: 
রাসূল (সা.) ও তার দুই প্রিয় খলিফা আবু বকর (রা.) ও ওমর (রা.) এর রওজা ধারাবাহিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত। তাদের রওজার কামরাটিতে প্রবেশ পথে স্থায়ীভাবে সোনালি গ্রিলের বেষ্টনী দিয়ে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে রাসূল (সা.) এর রওজার কামরায় প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।

> আয়েশা (রা.) এর ঘর: 
ইন্তেকালের পর রাসূল (সা.)-কে উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) এর ঘরে দাফন করা হয়। অর্থাৎ যেখানে তার ইন্তেকাল হয়, সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। মসজিদে নববীর আঙিনায় অবস্থিত ছোট ঘরটিতে রাসূল (সা.) তার স্ত্রী আয়েশাসহ (রা.) বসবাস করতেন। তার অন্যান্য স্ত্রীর কামরাও একসঙ্গে সারিবদ্ধভাবে লাগোয়া ছিল। কামরাগুলো তখন মসজিদে নববীর মূল অংশ থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন ছিল। পরবর্তীতে রাসূল (সা.) এর কবর মসজিদে নববীর মূল অংশের ভেতরে সংযুক্ত করা হয়।

> গ্রিলের মধ্যে তিনটি ছিদ্রপথ: 
রাসূল (সা.) এর রওজার কামরাটি চারদিক থেকে বেষ্টনী দিয়ে আবদ্ধ থাকায় রাসূল (সা.) এর রওজা ও তার দুই সঙ্গীর কবর বাইরে থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তবে সবুজ রঙ্গের বেষ্টনীগুলো এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে কেউ খেয়াল করলে ভেতরে দেখতে পারে। পাশাপাশি কামরাটির প্রবেশপথের গ্রিলে তিনটি ছিদ্র পথ রয়েছে, যা দিয়ে রাসূল (সা.) এর রওজা ও তাঁর দুই সঙ্গীর কবর সরাসরি দেখা যায়। প্রথম বড় ছিদ্রপথ দিয়ে রাসূল (সা.) এর রওজা। মাঝের ছিদ্রপথ দিয়ে আবু বকর (রা.) এর ও শেষ ছিদ্রপথ দিয়ে ওমর (রা.) এর কবর দেখা যায়।

> দেয়ালে ঘেরা: 
রাসূল (সা.) এর রওজা যে কামরায়, সেটার দেয়াল কালো পাথর দিয়ে তৈরি। দেয়ালটি রাসূল (সা.) এর রওজা ও তাঁর দুই সঙ্গীর কবরকে ঘিরে রেখেছে। ইসলামী ইতিহাসের অন্যতম মহান খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ (র.) ৯১ হিজরিতে দেয়ালটি নির্মাণ করেন। যাতে কেউ রাসূল (সা.) এর রওজার ঘরে চাইলেই প্রবেশ করতে না পারে।

> মাটির গভীরেও ঘেরাও দেয়া: 
রাসূল (সা.) এর রওজার চারপাশকে সুলতান নুরউদ্দিন জংকি গলিত সিসা দিয়ে আবদ্ধ করে দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে খ্রিস্টান ও ইহুদি দুষ্কৃতিকারীরা কবর থেকে রাসূল (সা.) এর দেহ মুবারক চুরি করার চেষ্টা করলে সুলতান এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেন। রাসূল (সা.) এর রওজার চারপাশে মাটির গভীর থেকে এই বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।

> যেখানে ইন্তেকাল সেখানেই তার দাফন: 
যে জায়গাটিতে রাসূল (সা.) ইন্তেকাল করেন, ঠিক সে জায়গায়ই তাকে দাফন করা হয়েছে। রাসূল (সা.) এর ইন্তেকালের পর মিহরাবের কাছে নাকী জান্নাতুল বাকির কবরস্থানে দাফন করা হবে এ নিয়ে বিভিন্ন মত আসে। তখন আবু বকর (রা.) বলেন, তিনি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, নবী যেখানেই ইন্তেকাল করেন, সেখানেই তাকে দাফন করতে। আবু বকর (রা.) এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আয়েশা (রা.) এর কামরায় এবং রাসূল (সা.) এর শেষ শয্যার স্থানেই তাকে দাফন করা হয়।