ধলাই ডেস্ক: একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড, যে ঘটনায় জেলে রয়েছেন তিন ছেলে। অন্য এক ছেলেসহ স্ত্রীরা আত্মগোপনে। কিন্তু স্বামীর ভিটা ছেড়ে কোথাও যাননি বৃদ্ধা মা। দুশ্চিন্তায় আর অনাহারে ফাঁকা ঘরেই বৃদ্ধা মা মরে পড়ে রইলেন। লাশেও ধরেছে পচন। তবে কবে মৃত্যু হয়েছে কেউ বলতে পারছেন না। এলাকায় তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ানোর পর গতকাল সোমবার বাড়িতে পৌঁছে পেছনের দরজা দিয়ে ওই বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রতিবেশীরা জানান, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভূকশীমইল ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা ও পৌর শহরের ব্যবসায়ী আব্দুল মনাফকে ১২ ডিসেম্বর তারই চাচাতো ভাই শাহিনুর রহমান শাহিদসহ স্বজনরা হত্যা করেন। পরে বাড়ির পেছনে একটি গর্তে মাটিচাপা দিয়ে পুঁতে রাখেন।
এ ঘটনায় ১৫ ডিসেম্বর শাহিনুর ও তার ভাইকে আটক করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন। পুলিশ ওইদিন রাতে শাহিনুরদের বাড়ির পেছনে সেপটিক ট্যাংকের পাশে গর্ত থেকে মাটিচাপা দেয়া লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহিনুর রহমান ও তার বড় ভাই আতিকুর রহমান চান মিয়াসহ জড়িত সাত আসামির ছয়জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে, এ ঘটনার পর থেকে বৃদ্ধা মা জুবেদা খাতুনকে একা ঘরে রেখে পালিয়ে যান ঘাতক শাহিনুর ও আতিকুর রহমানের স্ত্রী-সন্তানরা এবং তাদের ভাই শাহিদুল। ওই বৃদ্ধার মেয়ে আফসা বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে সোমবার সকালে বাবার বাড়িতে এসে ঘরে অনেক ডাকাডাকি করেন। ডাকাডাকিতে মায়ের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান।
খবর পেয়ে টিম নিয়ে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায়সহ সেখানে যান। পরে ঘরের ভেতরে বিছানা থেকে জুবেদা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, দু-তিনদিন আগে হয়তো বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। পরে লাশে পচন ও গন্ধের সৃষ্টি হয়।
ওসি বিনয় ভূষণ রায় বলেন, সুরতহালে বৃদ্ধার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মনাফ হত্যার জের ধরে বৃদ্ধার কাছে কেউ না থাকায় তিনি অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অধিকতর তদন্ত ও নিশ্চিতের জন্য লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।