স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে বাচ্চাসহ ৫শতাধিক ছাগল মারা গেছে। প্রথমে জ্বর, সর্দি ও সব শেষে ডায়রিয়া হয়ে আক্রান্ত ছাগলগুলি মারা যায়। ছোয়াছে রোগ হলেও সঠিকভাবে মৃত পশুর সৎকার করা হচ্ছে না। গত এক সপ্তাহে মাধবপুর ইউনিয়নে ১৬৬টি ছাগল মারা গেছে।
সোমবার( ৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মাধবপুর ইউনিয়ন এলাকা ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাধবপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫শতাধিক ছাগল মারা গেছে। মারা যাওয়া ছাগলের মাঝে বাচ্চার সংখ্যা বেশী বলে জানা যায়।
পিআির রোগে আক্রান্ত হয়ে মাধবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের খামারি আতাউর রহমানের ৩৩টি, পারোয়াবিল গ্রামের কৃষক ছবুর মিয়ার ১৩টি, একই এলাকার গোপাল নুনিয়ার ৬টি, ইসমাইল মিয়ার ৬টি,ছয়সিড়ি গ্রামের আব্দুল আলিমের ২টি,আরেক চা শ্রমিকের ১১টি, কাটাবিল গ্রামের দুই কৃষকের ১৩টি, চা শ্রমিক অতুল নুনিযার ১০টি, রামচন্দ্র গড়ের ১০টি, সুমন দাসের ৫টি,শ্রীনাত ভরের ৩টি, শ্রীনাত দাসের ২টি, সঞ্জয় বীনের ১৩টি, গোপাল নুনিয়ার ৫টি, মাধবপুর চা বাগান ৮নং লাইনের শ্রমিক সঞ্জয় দাসের ১৯টি, মাধবপুর বাজারের ইকবার হোসেনের ২টি, রাম নারায়ণ যাদবের ২টি, কাটাবিল গ্রামের সুজিত কাহারের ৩টি, রাম দয়াল ভরের ৪টি, রুহিত লাল ভরের ২টি, বসন্ত কৈরীর ২টি,শ্রীরাম ভরের ২টি ছাগল মারা গেছে। পার্শ্ব বর্ত ী অন্যান্য গ্রাম সহ সব মিলিয়ে ৫ শতাধিক ছাগল মারা গেছে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতিগস্ত হয়েছেন ছাগলের মালিক কৃষক ও চা শ্রমিকরা।
ক্ষতিগ্রস্ত চা শ্রমিক অতুল নুনিয়া বলেন প্রথমে তার ৫টি ভেড়া জ্বরে আক্রান্ত হয়। তার পর শুরু হয় সর্দি। সবশেষে আক্রান্ত পশুর পেট ফুলে ডায়রিয়া হয়ে একে একে ৫টি ভেড়া ও ৫টি ছাগল মারা গেছেন। একই অভিযোগ করেন চা শ্রমিক গোপাল নুনিয়া, ইসমাইল মিয়া ও কৃষক ছবুর মিয়া। ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, এ রোগ সম্পর্কে তাদের কোন ধারণাই নেই। স্থানীয় পশু চিকিৎসক রামভজন ভরকে এনে অসুস্থ্য ছাগলের চিকিৎসা করতে গিয়ে জানতে পেরেছেন এটি পিপিআর রোগ।
স্থানীয় পশু চিকিৎসক রামভজন ভল বলেন, আক্রান্ত ছাগলের প্রথমে জ্বর হয়। এর পর সর্দি হলে নাক দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে। সবশেষে ছাগলের পেট ফুলে ডায়রিয়া হয়ে মারা যায়। চিকিৎসা সেবায় আক্রান্ত ছাগল ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তবে বাচ্চা ছাগল ও দুর্বল ছাগল মারা যায়।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হিদায়াত উল্যাহ বলেন, ছাগলের পিপিআর রোগ সারা বছর হয়ে থাকে। তাছাড়া ঠান্ডায় ছাগল ফুসফুসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এ রোগের লক্ষণ প্রথমে জ্বর হয়। তার পর সর্দি। সবশেষে পেট ফুলে পেটের পীড়া ও ডায়রিয়া হয়। এটি একটি ছোঁয়াছে রোগ। আক্রান্ত ছাগলের পাশের ছাগলও দ্রুত আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎসায় রোগমুক্ত হয় ছাগল। দবে মাধবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পিপিআর রোগের প্রকোপের বিষয়টি তিনি জানেন না। বা কেই তাকে অবহিত করেনি। মঙ্গলবার পানি সম্পদ বিভাগের একটি দল নিয়ে আক্রানাত এলাকায় যাবেন বলেও তিনি জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, আজ সোমবার এ রোগে ছাগল আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার কথা শুনেছেন। তিনি উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে।