ডেস্ক রিপোর্ট: জয়পুরহাটের ২ বন্ধু লেখাপড়া শেষ করে ভালো কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা নিজ উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ করেন। আশাতীত ফলন আর ভালো বাজার থাকায় এখন লাভের স্বপ্ন দেখছেন তারা। স্থানীয় কৃষি বিভাগও মনে করছে, পেয়ারা চাষের এ সাফল্য এলাকার কৃষকদের স্বাবলম্বী হতে অনুপ্রাণিত করবে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার কেশবপুরের বিএ পাস করা মারুফ আহম্মেদ ও গুলশান মোড়ের এইচএসসি পাস করা জার্জিস ইসলাম পেয়ারা চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে পাঁচবিবি উপজেলার কলন্দপুর এলাকায় প্রায় ১২ বিঘা জমি বছরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় সাত বছরের জন্য পত্তন নিয়ে শুরু করেন পেয়ারা চাষ।
এরপর নাটোর থেকে আড়াই হাজার উন্নত জাতের থাই-৩ পেয়ারা গাছের চারা প্রতিটি ৭০ টাকা দিয়ে কিনে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে রোপণ করেন। ঠিকমতো পরিচর্যায় চার মাস পর থেকেই ফলন আসা শুরু করলেও তারা নয় মাস পর থেকেই ফলন নেওয়া শুরু করে। প্রতি সপ্তাহে ৩৫-৪০ মণ পেয়ারা বিক্রি করেন। ওই বছরই মণপ্রতি দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা করে প্রথম চালানে বিক্রি করেন ৯শ’ মণ পেয়ারা। দ্বিতীয় চালানে বিক্রি করেন ৪শ’ মণ পেয়ারা।
পেয়ারা বিক্রির টাকা না নিয়ে বাগানে পর্যায়ক্রমিকভাবে ২৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন তারা। এখন সপ্তাহে ২০-২৫ মণ পেয়ারা ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। বাজার অনুপাতে প্রতিমণ পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে। নিজেরা পরিচর্যার পাশাপাশি বাগানে লোকও নিয়োগ করেছেন তারা।
বাগানের শ্রমিক মাহবুব ও নূরুন্নবী বলেন, ‘আমরা ৮ জন শ্রমিক এখানে কাজ করছি। ৮ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে বেতন পাই। সবসময় এখন আমাদের কাজ থাকে। এতে আমরা আর্থিকভাবে অনেকটা স্বচ্ছল হয়েছি।
মারুফ ও জার্জিস জানান, ‘আমরা নাটোরে একটা বাগান পরিদর্শন করে উদ্ধুদ্ধ হই। বাগানে আমরা বিষমুক্ত পলিব্যাগে ফল উৎপাদন করছি। রাসায়নিক কোন পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যাংক থেকে কোনরকম সুযোগ-সুবিধা দেয়নি। সাহায্য-সহযোগিতা পেলে বড় পরিসরে বাগান করার ইচ্ছা আছে।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, দু’জন বেকার যুবকের উদ্যোগে গড়ে তোলা এই সফল পেয়ারা বাগান এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের পথ সুগম করবে।