ধলাই ডেস্ক: মরদেহ শনাক্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকার মোহাম্মদপুরের কলেজশিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ জিসান হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ায় এবং প্রেমিকা ব্রেকআপ করায় বন্ধুর পরিকল্পনায় জিসানকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয়-সার্কেল) তানিয়া সুলতানা এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিবালয় থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির বলেন, আসামিরা সবাই সমবয়সী এবং শিক্ষার্থী। তাদের সনদপত্র যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে বয়স নিশ্চিত করা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা বলেন, ঢাকার মোহাম্মদপুর হাজী মকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ জিসান ১৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
১৮ নভেম্বর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় ময়নাতদন্তের পর ওই মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়। দুদিন আগে জামা-কাপড় দেখে ওই মরদেহ জিসানের বলে শনাক্ত করেন স্বজনরা।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা বলেন, আসামি রাব্বি হোসেন একসময় মোহাম্মদপুরে থাকতেন। সেখানে জিসানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। জিসানের এক বান্ধবীর সঙ্গে রাব্বির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একদিন জিসানের সহযোগিতায় রাব্বি তার প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে যান।
ঘুরতে যাওয়ার পর কয়েকজন যুবক তাদের আটকে রাব্বির মোবাইল এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনার কিছুদিন পর প্রেমিকার সঙ্গে রাব্বির ব্রেকআপ হয়। এরপরই রাব্বির সন্দেহ হয়; মোবাইল এবং নগদ টাকা ছিনতাই ও প্রেমিকার ব্রেকআপের ঘটনায় জিসান জড়িত। এজন্য জিসানের প্রতি ক্ষোভ তৈরি হয় রাব্বির। সেই সঙ্গে রাব্বি তার বন্ধুদের বিষয়টি জানান। পরে বন্ধুরা সবাই জিসানকে ডেকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করেন।
এদিকে, জিসানেরও এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই মেয়ের বড় বোনের বাড়ি শিবালয়ে। পারিবারিক এক অনুষ্ঠানে মেয়েটি শিবালয়ে বেড়াতে এলে রাব্বি ফোন করে জিসানকে যেতে বলেন।
১৫ নভেম্বর শিবালয়ে গেলে রাব্বি ও তার বন্ধুরা নদী দেখার কথা বলে জিসানকে নদীর পারে নিয়ে যান। এরপর পেছনে হাত বেঁধে পেটে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে জিসানকে হত্যা করা হয়।
হত্যার পর জিসানের মরদেহ নদীতে ভাসিসে দেন বন্ধু ও তার সহযোগীরা। দুদিন পর নদী থেকে সিজানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যার ঘটনায় সিজানের বাবা শাহীন আলম মামলা করেছেন। শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র: জাগো নিউজ…