ধলাই ডেস্ক: বই উৎসব মানেই অন্য রকম এক আনন্দ। শিক্ষাবর্ষের শুরুটা তাই আনন্দময় করে তুলতে বছরের প্রথম দিনেই উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয় সরকার। এবার করোনার কারণে উৎসব করা সম্ভব না হলেও বই ঠিকই পৌঁছে যাবে শিক্ষার্থীদের কাছে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে তাই অধীর অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বের অংশ হিসেবে নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন বই পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। ১ জানুয়ারিকে সামনে রেখে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের সব আয়োজনও শেষ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে করোনার কারণে এবার স্কুলে স্কুলে বই উৎসব হচ্ছে না। উৎসব না হলেও বই প্রাপ্তির আনন্দ আর উত্তেজনার কমতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, এই উৎসবের জন্য সারাবছর ধরে অপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা। এবার করোনার কারণে বই উৎসব করা হয়তো সম্ভব হবে না। তবে এ আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে সেজন্য নতুন বই বছরের প্রথম দিনেই তাদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে। শিশু-কিশোরদের শিক্ষাজীবনকে সহজ আর আনন্দময় করে দিতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত দেশের ৩৮ জেলার ১৭৫টি উপজেলায় প্রাথমিকের দুই কোটি বই হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বছর প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩৬ কোটি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। এরই মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে চার কোটি বই বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুই কোটি বই স্কুলে স্কুলে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিজয় দিবসের আগেই ৩২ কোটি বই পাঠানো হবে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩৬ কোটি বইয়ের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা পাবে প্রায় ১০ কোটি ৫৪ লাখ বই। এছাড়াও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা পাবে ২৪ কোটি ৪১ লাখ বই। আর এসব বই ছাপাতে সরকার খরচ করছে এক হাজার একশ’ কোটি টাকা।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, বছরের শুরুতে বই হাতে পেলে শিক্ষার্থীরা আলাদা করে প্রেরণা পায়। আমরা এই উৎসাহ কখনোই বন্ধ করবো না। এবারও বছরের প্রথম দিনেই বই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, বিপুল সংখ্যক বই ছাপাতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন ছাপাখানার কর্মচারীরা। বই তৈরির পরই সেটি এনসিটিবিকে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। সেখানে ছাড়পত্র পাওয়া মাত্রই জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, এনসিটিবির কর্মকর্তারা নিয়মিত এসব ছাপাখানা মনিটরিং করছেন। কেউ যেন নিম্নমানের কাগজ দিতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য পরখ করে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের বই তৈরি আছে। করোনার কারণে যেভাবে বই উৎসব করি সেভাবে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারব না। তবে বিকল্প পদ্ধতিতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। গত ১১ বছরে ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৬টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…