ধর্ম ডেস্ক: বিশ্বনবির চরিত্র কেমন? এ সম্পর্কে মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি উত্তরে বলেছিলেন, ‘তোমরা কি কুরআন পড়নি?’ পুরো কুরআনই প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চরিত্র। তাঁর চরিত্র সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে আল্লাহ তাআলা সত্যায়িত করে বলেন-
‘আর নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা কালাম : আয়াত ৪)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পুরো জীবনই ছিল আলোকিত। বিশ্বমানবতার জন্য পরিপূর্ণ এক আলোকবর্তিকা। যে আলোর মশালই দুনিয়া ও পরকালের সফলতার জন্য সুনির্ধারিত। তাঁকে ছাড়া অন্য কোথাও আর আলো খোঁজার প্রয়োজন নেই। কুরআনুল কারিমে সে ঘোষণাও দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা-
আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম। আর তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩)
আর এ আয়াত নাজিল হয়েছে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর। যার মাধ্যমে পরিপূর্ণ ও মনোনীত হয়েছে ইসলাম। এ সবকিছুর পরিপূর্ণতা ও হুবহু বাস্তবায়ন ছিল প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে। তাইতো আল্লাহ তাআলা শর্তসহ ঘোষণা করেন-
‘সেসব মানুষের জন্য অবশ্যই রাসুলের জীবনে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ। যারা আল্লাহ ও পরকালের আশা (ভয়) করে ভয় এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে (হুকুম পালনের মাধ্যমে) স্মরণ করে।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ২১)
আল্লাহ তাআলার এসব ঘোষণা তখনই বাস্তবে রূপ নেবে যখন মুমিন মুসলমান প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিসের ওপর পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে হুবহু পালন করবে। আর তাতেই আলোকিত হয়ে যাবে মুমিন মুসলমানের পুরো জীবন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে লক্ষ্য করে বলেন-
– হে ছেলে! যদি তোমার পক্ষে সকাল-সন্ধ্যা এভাবে কাটানো সম্ভব হয় যে, তোমার অন্তরে কারও প্রতি কোনো মলিনতা নেই, তবে সেভাবে কাটাবে। তারপর বলেন-
– হে ছেলে! এটা আমার সুন্নাত। আর যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে জিন্দা করল (বাচিয়ে রাখল) সে আমাকে ভালোবাসলো। আর যে ব্যক্তি আমাকে ভালোবাসলো সে আমার সঙ্গেই জান্নাতে থাকবে।’ (তিরমিজি)
সুতরাং মুমিনের অন্তর হোক সব সময় মলিনতামুক্ত। যেখানে থাকবে না কোনো জুলমাত তথা অন্ধকার। ইসলামের আলোয় আলোকিত হবে অন্তর।
প্রিয় নবির সিরাত পুরো কুরআনের আলোকে গঠিত হবে মুমিন জীবন। আর কুরআনের আলোয় জীবন গঠিত হলেই মুমিন লাভ করবে সুন্নাতের আলোকিত জীবন।
যখনই সুন্নাতের আলোকিত জীবনে নিজেকে রাঙাতে যাবে মুমিন তখনই তার মাঝে তৈরি হবে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা।
আর যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা লাভ করতে সক্ষম হবে, হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী সে ব্যক্তিই প্রিয় নবির সঙ্গে জান্নাতে থাকবে।
আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনা অনুযায়ী সুন্নাতি জীবন যাপন করে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।