রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ৩:২৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯

ধলাই ডেস্ক: রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার পেশোয়ার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার আহমাদ শেঠ নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের বিশেষ আদালত ৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সেনা প্রধানকে এ শাস্তি প্রদান করেন বলে পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসমূহ জানিয়েছে।

২০০৭ সালে অবৈধভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারির জন্য ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় এই সাজা দেয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম বেসামরিক আদালতে দেশদ্রোহের অভিযোগে কোনো সামরিক কর্মকর্তার বিচারের রায় এল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন।

দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের পক্ষে আইনজীবী আলী জিয়া বাজওয়া সাবেক এই সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন।

বাজওয়া বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ, আব্দুল হামিদ দোগার ও জাহিদ হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে চায় সরকার। এক সঙ্গে সব অভিযুক্তের বিচার করা উচিত। সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের এই সহযোগীদেরও বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অপসারণ করে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসন করেন মোশাররফ। রাষ্ট্রদ্রোহ, জরুরি অবস্থা জারি, বেআইনি উপায়ে বিচারপতি বরখাস্ত, বেনজির ভুট্টো হত্যা এবং লাল মসজিদ তল্লাশি অভিযান সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি মামলায় বর্তমানে পলাতক রয়েছেন সাবেক এই পাক সেনাপ্রধান।

২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে দেশটির আদালতে মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আদালতে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা দায়ের হয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে ওই বছর মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। একই বছর ৫ এপ্রিল তার ওপর বিদেশ ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

২০১৪ সালের ৩১ মার্চ এই মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে আদালত সাবেক এই স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ বিশেষ আদালতের কাছে হস্তান্তর করেন।

২০১৬ সালের মার্চে তার ওপর জারি করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিবৃতি প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুবাইয়ের উদ্দেশে পাকিস্তান ছাড়েন মোশাররফ। বর্তমানে সেখানেই বসবাস করছেন তিনি।

সংবিধান লঙ্ঘন করে জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগে পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার এই মামলা দায়ের করেছিল পাকিস্তানের তৎকালীন ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সরকার।