ধলাই ডেস্ক: ‘আগের মতো ঝামেলা নেই। এখন হাসপাতালে ভালো সেবা পাওয়া যায়। করোনার সময় এমন ভালো সেবা পেয়ে আমরা খুশি।’ কথাগুলো বললেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা ছাতিয়ানগড় গ্রামের ভৈরবী রায়। নরমাল ডেলিভারিতে মা হয়েছেন তিনি।
তার মতো একইভাবে নরমাল ডেলিভারিতে মা হয়েছেন আরও ২৭১ নারী। খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৭২ শিশুর জন্ম হয়েছে নরমাল ডেলিভারিতে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত তিন মাসে দেশে চলমান লকডাউনের মধ্যে শনিবার (৩০ মে) পর্যন্ত খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৭২ শিশুর স্বাভাবিক জন্ম হয়।
চিকিৎসক, নার্স-মিডওয়াইফ, ওয়ার্ডবয় ও কর্মচারী সবাই একই পরিবারের সদস্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই জরুরি বিভাগ, ফ্লু কর্নার, সীমিত পরিসরে আউটডোর ও ইনডোরে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিগত বছরে স্বাস্থ্য সেবায় বিভাগে তৃতীয় ও জেলার প্রথম হয়েছিল খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, গত তিন মাসে দেশে চলমান লকডাউনের মধ্যে শনিবার পর্যন্ত ২৭২ শিশুর স্বাভাবিক জন্ম হয়েছে। গত মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রসব পূর্ববর্তী এএনসি সেবা নিয়েছেন ২০৯২ জন ও প্রসব পরবর্তী পিএনসি সেবা নিয়েছেন ৫৬৪ জন। প্রতিদিন গড়ে আড়াই শতাধিক রোগী ফ্লু কর্নার, আউটডোর ও জরুরী বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব তার সবটুকু দিয়েই মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। করোনা পরিস্থিতিতে নিজের জীবনের ঝুঁকি থাকলেও দেশের দুঃসময়ে সেবার মাধ্যমে প্রসূতি মায়ের কোলে একটি সুস্থ ও ফুটফুটে শিশুকে তুলে দিতে পেরে নিজেদের গর্বিত মনে করি আমরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু রেজা মো. মাহমুদুল হক বলেন, সবার সহযোগিতায় হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবের হার বাড়ছে। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার পর সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় জন্ম নেয়া শিশুর জন্য জামা, মশারি ও ওই শিশুর মাকে উপহার দেয়া হয়।
অবশ্য এর আগে ৮ মে ফেসবুকে লাইভে এসে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, করোনার সময় লকডাউনে দেশে এক লাখ ৭৫ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে, এর মধ্যে মাত্র চার শতাংশ শিশুর জন্ম সিজার অপারেশন হয়েছে। আর বাদ বাকি ৯৬ শতাংশ শিশুর জন্ম হয়েছে নরমালে।
তিনি আরও বলেন, যখন লকডাউন ছিল না তখন ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শিশুর জন্ম হতো সিজারে। প্রসূতি নারীকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার এমনভাবে বোঝাতেন সিজার না করলে বাচ্চা বা মাকে বাঁচানো সম্ভব না। করোনাভাইরাস আমাদেরকে কতকিছু শেখাচ্ছে?।