কমলগঞ্জে মিথ্যে মামলায় হয়রানির অভিযোগে মহাবিষ্ণু মন্দির সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
ছবি ধলাইর ডাক

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ইটখোলা এলাকায় শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দিরের একটি ঘরে ইসকনের সদস্যরা নামহট্ট সংঘের নামে পূজা অর্জনা করা নিয়ে বিরোধে উভয় পক্ষের মাঝে গত ২৫ নভেম্বর সংঘর্ষ হয়েছিল। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হলে ইসকন অনুসারী নামহট্ট সংঘের পক্ষ থেকে মৌলভীবাজার আদালতে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির কমিটির সদস্যদের উপর পরপর তিনটি মামলা করায় শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির কমিটির সদস্যরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পেতে ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বিরোধ নিষ্পত্তির দাবিতে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির কমিটির সদস্যরা কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির শমশেরনগরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে বুধবার বেলা দেড়টায় এক সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মদ্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিরণ বৈদ্য বলেন, ১৯৬২ সালে আলীনগর চা বাগানের ইটখোলা লাইনে সার্বজনিন শ্রী শ্রী রাখালথলি মহাবিষ্ণু মন্দিরটি স্থাপতি হয়। এরপর থেকে এ এলাকার চা বাগানসহ সর্বস্তরের সনাতনী হিন্দু সম্পদায়ের লোকজন নিয়মিত এ মন্দিরে পূজা অর্চনা করে আসছেন।

দামোদর মাস উদযাপন উপলক্ষে মহাবিষ্ণু মন্দিরের নিজস্ব টিনশেড ঘরে ইসকন সমর্থিত কিছু যুবকদের এক মাসের জন্য পূজা অর্চনার জন্য সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ঐ যুবকরা নামহট্ট সংঘের নামে পূজা অর্চনা শুরু করে। একই জমির মধ্যে এক সাথে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির ও নামহট্ট সংঘের পূজা অর্চনা নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ইসকন সমর্থক নামহট্ট সংঘের যুবকেরা সুকৌশলে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দিরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করে।

গত ২৫ নভেম্বর শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে ইসকন সমর্থিত নামহট্ট সংঘের সদস্যদের তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু সংঘের ৭ জন যথাক্রমে কিরণ বৈদ্য (৩২), বরুন বৈদ্য (৩৯), চামটু রবিদাস (৪২), শৈলেন কুমার বৈদ্য (৩০),রাম কুমার বৈদ্য (৫০) ধারী লাল বৈদ্য (৫২) ও শির কুমার বৈদ্য (৪১) আহত হয়েছেন। আহতদের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। নামহট্ট সংঘের সদস্যরা উল্টো শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দিরের সদস্যদের আসামী করে মৌলভীবাজার আদালতে মিথ্যে অভিযোগ তুলে পর পর তিনটি হয়রানীমূলক মামলা করেছেন। এ মামলার কারণে তারা এখন নানাভাবে হয়রানির শিকার, আর্থিক ক্ষতি ও সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন বলে কিরণ বৈদ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয় নামহট্ট সংঘের সদস্যরা পূজা অর্চনার আড়ালে নানা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে পড়ছে। কিছুদিন পূর্বে ইসকন সমর্থক এক ভক্ত কলেজ ছাত্রী নামহট্ট সংঘের এক সদস্যের সাথে পালিয়ে যায়। এজন্য শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির সমর্থক ও এলাকাবাসী তাদেরকে এ মন্দির এলাকায় অবস্থান করার সুযোগ দিতে চাচ্ছে না। তারা নিজেরা নিজেদের ঘর ভাঙ্গচুর করে মামলা সাজিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুপচাঁন কৈরী, কোষাধ্যক্ষ শৈলেন কুমার বৈদ্য, আলীনগর ইউপি সদস্য রাম বরস বৈদ্য, চা শ্রমিক রাহুল যাদব ও কমিটির উপদেষ্ঠা রাজ কাপুর কৈরী প্রমুখ।

তবে প্রতিপক্ষ ইসকন সমর্থিত নামহট্ট সংঘের সদস্য প্রতাপ বৈদ্য মুঠোফোনে বলেন, আসলে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দিরে গত ৬ মাস আগে একটি পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এখন চেয়েছিল এই বিষ্ণু মন্দিরে মহাহট্ট সংঘ নিবন্ধিত হয়ে তাদের কথামত চলতে হবে।

গত ২৫ নভেম্বর দামোদর মাস উপলক্ষে পূজা অর্চনার জন্য প্রসাদ তৈরী করা হচ্ছিল। তখনই মহা বিষ্ণু মন্দিরের লোকজন এসে মহাহট্ট সংঘের মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাঙ্গচুর করেছে। সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।