কমলগঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে দুবাই প্রবাসীর অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
ছবি ধলাইর ডাক

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: বাসা ভাড়া ও চাকুরী দেওয়ার নামে নেয়া আড়াই লক্ষ টাকা চাইতে গিয়ে ভাড়াটিয়া লালনুর রহমানের আক্রমন ও বাসা মালিক দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী কলেজ রোডস্থ বাসায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় সাংবাদিক সমিতি কমলগঞ্জ ইউনিটের শমশেরনগরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন দুবাই প্রবাসী আক্তার উদ্দীন বাবু ও তার স্ত্রী ফারহানা জেসমিন।
লিখিত বক্তব্যে দুবাই প্রবাসী আক্তার উদ্দীন বাবু বলেন, তিনি কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মঈনুদ্দীন এর ছেলে। কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী গ্রামে আমার দোতলা বিশিষ্ট বাসার নিচ তলায় ভাড়াটিয়া হিসাবে গত এক বছর ধরে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর গ্রামের আকলিম আলীর ছেলে লালনুর রহমান (৪০) স্বপরিবারে বসবাস করেন। বাসা ভাড়া নেওয়ার সুবাদে লালন নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরিচয় ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পরিচিত বলে দাবি করে। পরে সে আমার স্ত্রী ফারহানা জেসমিনকে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকতা পদে চাকুরী দিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালকে টাকা দেয়ার নামে এককালীন নগদ দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয়। এর প্রমাণ স্বরূপ দেড়শত টাকার একটি স্প্যাম্পে লেখাপড়া করে লালন স্বাক্ষর প্রদান করে।

আমি বিদেশে যাওয়ার সময়ে সে আমার স্ত্রীর চাকুরীর জন্য স্বামীর অনুমতি লাগবে বলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে এবং সে কাগজ উর্দ্বতন অফিসে জমা দিতে হবে বলে কৌশলে দেড়শ টাকার একটি সাদা স্ট্যাম্পেও আমার স্বাক্ষর নেয়। পরে সময অতিবাহিত হলে বিষয়টি জালিয়াতি বলে ধারণা হয়। তার জালিয়াতির এই ঘটনায় তিনি কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তিনি আরও বলেন, মাসিক ৪ হাজার টাকা বাসা ভাড়া নেয়ার শর্ত পুরণ করেও গত ৮ মাস যাবত লালন বাসা ভাড়া পরিশোধ করেনি। দেশে আসার পর বাসা ভাড়া দেওয়ার জন্য লালনুর রহমানকে চাপ দিলে সে নানা অজুহাত দেখিয়ে ও পরে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। সে নিজেকে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। বিষয়টি শমশেরনগর ইউপি সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান এবং পুলিশ কর্মকর্তাদেরও দ্বারস্থ হলেও লালন কারো ডাকে আসতে রাজি হয়নি।

দুবাই প্রবাসী আক্তার উদ্দীন বাবু জানান, সর্বশেষ গত রোববার আমি ও আমার স্ত্রী বাসায় গিয়ে লালনের কাছে বকেয়া ভাড়া ও চাকুরীর জন্য নেয়া টাকা ফেরত দিতে দাবি করি। এসময় লালন উত্তেজিত হয়ে আমাকে আক্রমন করে। তাকে বাঁধা দিলে আমার স্ত্রীকেও ধাক্কা দিয়ে টানা হেচড়া করে লাঞ্চিত করে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ রায়হান ফারুক, শমসেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ ও শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে ফোনে জানালে তারা ঘটনাস্থলে এসে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য বাসা তালাবদ্ধ করে রাখেন। লালন বাসার ভাড়া ও প্রতারনা করে নেয়া দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে নানা টালবাহানা এবং প্রবাসীকে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টায় লিপ্ত বলে দাবি করেন।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে লালনুর রহমান বলেন, বাসার মালিক আক্তার উদ্দীন বাবু বাসার কাজ করানোর জন্য আমার কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ধার নেয়। টাকা না দিয়ে বাসায় এসে আমাকে ও আমার ছেলেকে মারধোর করে লুটপাট করেছে। বর্তমানে মৌলভীবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে তিনি জানান।

শমসেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, পুলিশ আমাকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসা তালাবদ্ধ করে রাখি।