করোনা ঠেকাতে কাগুজে নোট পুড়িয়ে ফেলছে চীন

প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লড়াইয়ে এবার চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক করোনা বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোতে কাগুজে সব নোট পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থ লেনদেনে ভাইরাসের বিস্তার রোধ নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ।

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গুয়াংঝু শাখা বলছে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের লড়াইয়ের অংশ হিসেবে নগদ লেনদেনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল, বাজার এবং বাসে সংগৃহীত সব ধরনের নোট ধ্বংস করবে তারা।

শনিবার চীনের অর্থনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম চাইশিন এক প্রতিবেদনে বলছে, পিপলস ব্যাংক অব চায়নার (পিবিওসি) দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোর শাখা কর্মকর্তাদেরকে করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ ঝুঁকি রয়েছে; এমন খাতগুলো থেকে সব ধরনের কাগুজে নোট ধ্বংস করার জন্য প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

করোনায় বিপর্যস্ত শহরগুলোর এসব খাত থেকে কাগুজে নোট সংগ্রহ করে ভাইরাসমুক্ত করে সেগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা দেয়ার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফ্যান ইয়াইফাই শনিবার বলেছেন, গত ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে অন্তত ৬০০ বিলিয়ন ইউয়ান (৮৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) নতুন ব্যাংক নোট ছাড়া হয়েছে। এরমধ্যে ৪ বিলিয়ন ইউয়ান নোট চীনা নতুন চান্দ্রবর্ষের আগে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রাণকেন্দ্র উহানে পাঠানো হয়। তার এমন মন্তব্যের পর দেশটিতে নতুন নোট প্রত্যাহার ও ধ্বংস করার নির্দেশ আসে।

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, কাগুজে নোট জীবাণুমুক্ত করার জন্য উচ্চ তাপমাত্রা অথবা অতিবেগুনী রশ্মির ব্যবহার করা হবে। তারপর এসব নোট ১৪ দিনের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হবে।

চীনের গুয়াংঝু প্রদেশের বৃহৎ একটি জয়েন্ট স্টক ব্যাংকের উপ-প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুরনো কাগুজে নোট জমা দিয়ে নতুন নোট নেয়ার জন্য গ্রাহকদের নিশ্চিত করতে হবে যে তিনি সেই ব্যাংকের গ্রাহক ছিলেন। ফলে সরকারের এই উদ্যোগ খুব একটা কার্যকর হবে বলে মনে হয় না।

মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে সক্ষম চীনের উহানে উৎপত্তি হওয়া নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১ হাজার ৭৭০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের বাইরে হংকং, তাইওয়ান, জাপান, ফিলিপাইন ও ফ্রান্সে একজন করে মোট পাঁচজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

এই ভাইরাসে রোববার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭১ হাজার ৪৩৫ জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র চীনেই আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ হাজার ৫৪৮ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ১০ হাজার ৬১০ জন। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের সামুদ্রিক একটি খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের ২৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়লেও এর প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি।

সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।