টানা ৪১ দিন খায়েশ মেটালে হবে ধনী, দুই ছাত্রীকে ‘সাধু বাবার’ ধর্ষণ

প্রকাশিত: ৬:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২১
সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: নাম সবুর প্রামাণিক হলেও নিজেকে ‘সাধু সবুর’ বলে পরিচয় দেন ৫৫ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ। মাঝে মধ্যে নিজেকে জিন বলেও দাবি করেন। শুধু তাই নয়, টানা ৪১ দিন জিনের খায়েশ মেটালে ধনী হবে- এমন প্রলোভন দেখিয়ে নবম ও দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন কথিত সাধু সবুর।

ভণ্ড সাধু সবুরের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের প্রাণপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ভোলা প্রামাণিক।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা করেন ভুক্তভোগী নবম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা এবং দশম শ্রেণির ছাত্রীর বোন। নিয়মিত মামলা হিসেবে নেয়ার জন্য রাজবাড়ীর পাংশা মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রী জানান, তাকেসহ পরিবারের সদস্যদের জিন ও পরীর ভয় দেখান কথিত সাধু সবুর। এর অংশ হিসেবে মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুর তার বাবাকে বলেন- এক গ্লাস পানি নিয়ে তার মেয়েকে নিয়ে বাড়ির পাশে থাকা একটি তাল গাছের নিচে যেতেন। সবুরের কথায় সেই গাছের নিচে যান স্কুলছাত্রী।

সেখানে যাওয়ার পর হাত বেঁধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেন সবুর। চিৎকার দিতে গেলে সবুর তাকে ভয় দেখিয়ে বলেন- জিন তার বাবাকে মেরে ফেলবে এবং এ কথা কাউকে বললে পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে। তাকে টানা ৪১ দিন জিনের খায়েশ মেটাতে হবে। আর এ খায়েশ মেটালেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। এসব কথা বলে স্কুলছাত্রীকে দুবার ধর্ষণ করেন কথিত সাধু।

ভুক্তভোগী দশম শ্রেণির ছাত্রী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে নিজের বোনের বাড়িতে রয়েছেন তিনি। ওই বাড়িতে সবুর আসেন। তার বোন ও দুলাভাইকে বড়লোক করে দেওয়ার প্রলোভন দেখান সবুর। একই সঙ্গে স্কুলছাত্রীকে সবুরের বাড়িতে কথিত জিনের আসন বসানোর কথা বলেন। আর এ আসন না বসালে বড় ক্ষতি হবে বলে ভয় দেখান।

তিনি জানান, মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুরের বাড়ির কথিত জিনের আসনে যান তিনি। সবুর প্রথমে তাকে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে বলেন। নামাজ শেষ করতেই ঘরের আলো নিভিয়ে দেন সবুর। এরপর ভণ্ড সবুর একটি কালো রঙের জুব্বা পরে তার (স্কুলছাত্রী) সামনে আসেন। একই সঙ্গে শরীরে হাত দেন। এ সময় বাধা দেওয়ায় সবুর তাকে বলেন, ‘আমি এখন জিন সবুরের রূপে তোমার কাছে এসেছি, আমার খায়েশ মিটিয়ে দাও, তোমার মনের সকল আশা পূরণ হবে।’

এতে রাজি না হলে স্কুলছাত্রীকে নামাজের পাটির ওপর ফেলে ধর্ষণ করেন সবুর। এরপর একই ধরনের ভয় দেখিয়ে তাকে চারবার ধর্ষণ করেন।

পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন বলেন, বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনার পর থেকেই ভণ্ড সাধু সবুর পলাতক বয়েছেন। তাকে গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশ।