নদী ভাঙ্গন প্রতিকারের জন্য কমলগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পক্ষ থেকে ইউএনও বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান

প্রকাশিত: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০১৯
ছবি ধলাইর ডাক

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন ও কোনাগাঁও গ্রামের মধ্যবর্তী ২০০৬ সালে এলজিইডি কর্তৃক স্লুইসগেইট নির্মাণে অবকাঠিামো ক্রুটির কারণে সৃষ্ট নদী ভাঙ্গন প্রতিকারের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে ২৫০ ফুট পরিমাণ নদী ভাঙ্গনের পাড় বাঁধ নির্মাণ, অপরিকল্পিত স্লুইসগেইট অপসারন করা, লাউয়াছড়া নিরাপদ পানি প্রবাহের জন্য নদী খনন করা, ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের রাস্তা, স্কুল মাঠ, ফিশারী নির্মাণে সরকারি সহযোগিতা প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও নদী ভাঙ্গনের উভয় পাড়ে গাইডওয়াল নির্মাণের দাবি জানানো হয়। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় আদমপুর ইউনিয়নের শতাধিক কৃষক মিছিল সহকারে উপজেলা সদরে এসে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশেকুল হক এর কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় মৌলভীবাজার জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুর লাল দত্ত, সংগঠক এবং লেখক-গবেষক আহমদ সিরাজ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, সমাজসেবক আনোয়ার হোসেন বাবু, কৃষক নেতা মন্তাজ আলী, বিশ্বজিত সিংহ, স্থানীয় কৃষক উমেদ আলী, হাবিব আলী, সোয়েব আলী, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন-কোনাগাঁও গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে দরিদ্র কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে সরকারের দিক নির্দেশনায় উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০০৬ সালে একটি স্লুইসগেইট নির্মিত হয়েছিল। অবকাঠামোগত ক্রুটির কারণে সামান্য বৃষ্টি হলে পাহাড় থেকে নেমে আসা খর¯্রােতা পানি, ঝোঁপজঙ্গল ও আবর্জনা স্লুইসগেইটের মুখ বন্ধ হয়ে পানির ¯্রােত বাধাগ্রস্ত হয়ে লাউয়াছড়ায় ২৫০ ফুট পরিমাণ ভাঙ্গনের সৃষ্টি সৃষ্টি হয়ে এলাকায় বন্যায় প্লাবিত হয়। স্থানীয় মাঝেরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবেশ রাস্তা, স্কুলের মাঠ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় ধরে আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন, কোনাগাঁও, ছনগাঁও, তেতইগাঁও, ঘোড়ামারা, বন্দরগাঁও, ভানুবিল ও হুমেরজান গ্রামে বসবাসরত কৃষকের প্রায় ৩০০ একর কৃষিজমি বিনষ্ট হয়ে চাষের অনুপযোগি হয়ে পড়ছে। অতিসম্প্রতি নয়াপত্তর ও কোনাগাঁও গ্রামের ফসলি কৃষি জমির প্রায় ১৫০ একর বালু ও পলি মাটি ভরাট হয়ে চাষের অনুপযোগি হয়ে পড়ছে। আর্থিকভাবে দুর্যোগের মুখে স্থানীয় কৃষককুলের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে। নয়াপত্তন- কোনাগাঁও এলাকায় অপরিকল্পিত একটি স্লুইসগেটে ¯্রােতের পানি বাঁধাগ্রস্ত হয়ে বাঁধ ভেঙ্গে আট গ্রামের কৃষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিকল্প পথে পাহাড়ি ছড়ার পানি নিস্কাশিত হওয়ায় শত শত কিয়ার কৃষিজমিতে পলি জমে ভরাট হওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে অনাবাদি। বানের পানির সাথে বিপুল পরিমাণে বালু এসে আবাদি জমিতে জমাট বেঁধেছে।

স্মারকলিপি গ্রহণ করে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশেকুল হক জানান, তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে লাউয়াছড়ায় ভাঙ্গনকৃত ২৫০ ফুট বাঁধ মেরামতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে ।