ডেস্ক রিপোর্ট: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে পরীক্ষার ফি দিতে দেরি করায় মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ঘটনার তদন্তে নামার পর কয়েকজন শিক্ষক নেতার তদবিরে ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাদের ধামাচাপার কারণে ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো সুষ্ঠু বিচার পায়নি ওই স্কুলছাত্রী।
গত ২০ জুলাই উপজেলার পৃথিমপাশা ইউপির রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মন্তাজ আলী বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার ফি প্রদানে দেরি করায় উত্তেজিত হয়ে মারধর করেন। এতে ওই ছাত্রী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রধান শিক্ষক তার বাড়ি থেকে আনা জালি বেত দিয়ে পেটালে ছাত্রীর পিঠে ও হাতের বিভিন্ন জায়গা ফুলে যায়। এ সময় বিদ্যালয়ে থাকা ছাত্রীর ফুফু আমিনা আক্তার প্রধান শিক্ষকের মারধরের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাকেও তিনি মারধর করেন।
এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে ছাত্রীর বাবা মশাইদ আলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রক্ষিতে গত ২৭ জুলাই বিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্তে যান উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সৌরভ গোস্বামী। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিললেও একমাস পরও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
স্কুলছাত্রী জানায়, পরীক্ষার ফি দিতে দেরি হওয়ায় স্যার আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন।
প্রধান শিক্ষক মন্তাজ আলী দীর্ঘদিন থেকে নিজ এলাকায় চাকরির সুবাধে অন্যান্য শিক্ষকসহ অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আসছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. মন্তাজ আলী জানান, তিনি ছাত্রীকে মারধর করেননি। তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। শিক্ষা বিভাগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আইয়ুব উদ্দিন বলেন, তদন্তে অভিযোগের বিষয়টি প্রমাণিত। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত শেষে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
তদন্ত প্রতিবেদন ধামাচাপা দেয়া নিয়ে তিনি বলেন, কিছু শিক্ষক নেতার কারণে আমরা বিভিন্ন কাজে বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। তাদের কোনো অপচেষ্টায় কাজ হবে না। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।