সরকার রিজার্ভ থেকে এক পয়সাও নষ্ট করে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:০৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২২
সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি নেতাদের অপপ্রচারের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার কখনো রিজার্ভ থেকে এক পয়সাও নষ্ট করে না, বরং প্রতিটি অর্থ ব্যয় করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে।

বৃহস্পতিবার সকালে ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের সময় দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী সাভারের আশুলিয়া বাজার সংলগ্ন কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা সব সময় রিজার্ভের টাকা খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। রিজার্ভের টাকা থেকে কোনো অর্থ অপব্যবহার হয় না। বিএনপি নেতারা সব সময় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। কারণ, তাদের নেতা তারেক রহমানকে মানিলন্ডারিং মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং তিনি এখন পলাতক আসামি।

তিনি বলেন, তাদেরকে আমি বলতে চাই, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সময়ে এটি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার হয়। সেই জায়গা থেকে আমরা এই রিজার্ভ প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হই।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যোগাযোগ, যাতায়াত, আমদানি থেকে শুরু করে সবকিছুই প্রায় বন্ধ ছিল। আর যখনই যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্মুক্ত হয়, তখন আমাদের আমদানি করা, পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার জন্য ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থের বাড়তি জোগান ও রিজার্ভ থেকেই দিতে হচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশের মতো বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন প্রদান এবং করোনা টেস্টের ব্যবস্থা অনেক উন্নত দেশও করতে পারেনি।

সরকারপ্রধান বলেন, সারাবিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম, পরিবহন খরচ, জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, ভুট্টাসহ যেসব পণ্য আমদানি করতে হয়, তার দাম বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ চাল উৎপাদন করলেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিছু কিছু আমদানি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যেটুকু খরচ করেছি তা জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে। জনগণের খাদ্য কেনা, ওষুধ কেনা, জনগণের মঙ্গলের জন্যই করতে হয়েছে। সার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ আমাদের ক্রয় করতে হচ্ছে, নগদ টাকা দিয়ে আমরা কিনছি। তাছাড়া আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে আমরা কিন্তু বিমান ক্রয় করেছি। নদী ড্রেজিং যেমন নিজেদের অর্থে করছি, তেমনি কিছু কিছু বিনিয়োগও আমরা করছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই টাকা যদি সরকার অন্য দেশের ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নিতো, তাহলে সুদসহ টাকা পরিশোধ করতে হতো। আমাদের ব্যাংক থেকে দিলে যেটা সোনালী ব্যাংক থেকে আমরা দিচ্ছি; তাহলে ঐ সুদসহ দেশের টাকা দেশেই থেকে যাচ্ছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রায় ৮ বিলিয়নের মতো আমরা খরচ করছি। এখান থেকে কিছু ডলার শ্রীলংকার অর্থনৈতিক দুরবস্থায় ধার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এখানকার টাকা কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়নি, যেটা তাদের মনে সবসময় ভয় থাকে, তারা ঐরকম কথাই বলে। কাজেই মানিলন্ডারিং যাদের অভ্যাস, তারা শুধু এটাই জানে যে, টাকা বোধহয় সব নিয়েই যেতে হয়।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বক্তব্য রাখেন। সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। আশুলিয়া প্রান্তে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানসহ সর্বস্তরের মানুষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।