অস্ট্রেলিয়ার এক সিনেটরের বর্ণবাদী মন্তব্যের প্রতিবাদে তার মাথায় ডিম ভেঙে রাতারাতি বিখ্যাত বনে যাওয়া সেই কিশোর এবার পেল বিয়ের প্রস্তাব।
বর্ণবাদী মন্তব্য করা সিনেটর ফ্রাসার অ্যানিংকে বরখাস্তের দাবিতে মঙ্গলবার রাস্তায় নামা আন্দোলনকারীদের অনেকের কাছ থেকে এমন প্রস্তাব আসে বলে ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, সিনেটরের মাথায় ডিম ভাঙা কিশোর উইল কনোলিকে ‘এগবয়’ হিসেবে উল্লেখ করে অনেক মেয়ে আন্দোলনকারী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এমনই এক আন্দোলনকারীর প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— ‘আমি এগবয়কে বিয়ে করবো।’
আরেক নারীর প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— ‘এগবয়রা তখনই এগমেন হয়ে যায় যখন তারা বর্ণবাদী ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করে।’
প্রসঙ্গত, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর এ ঘটনায় জন্য মুসলমানদের দোষারোপ করে বক্তব্য দেন অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রাসার অ্যানিং। গত শুক্রবারের ওই হামলা এ পর্যন্ত ৫০ নিহত হয়েছে।
হামলার পর ওইদিনই এক বিবৃতিতে সিনেটর অ্যানিং বলেন, নিউজিল্যান্ডের রাস্তায় রক্ত ঝরার প্রকৃত কারণ হচ্ছে তাদের অভিবাসন কর্মসূচি, যা মুসলিম উগ্রবাদীদের অভিবাসনের প্রথম স্থান হিসেবে সুযোগ দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। তিনি বলেন, বরাবরের মতোই বামপন্থি রাজনীতিবিদ এবং সংবাদমাধ্যম আজ যে হামলা হয়েছে তার পেছনে অস্ত্র আইন অথবা যারা জাতীয়তাবাদী মনোভাব ধারণ করে তাদের দায়ী করতে ব্যস্ত হয়ে যাবে। যদিও এসবই ফালতু কথা।
এরপর শনিবার মেলবোর্নে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন অ্যানিং। এ সময় ১৭ বছরের উইল কনোলি স্মার্টফোন হাতে পেছনে দাঁড়িয়ে অ্যানিংয়ের বক্তব্য রেকর্ড করছিল। এক পর্যায়ে অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভেঙে দেয় কনোলি। বিস্মিত অ্যানিং দ্রুত পেছনে ফিরে কনোলির গালে চড় মারেন। কনোলি পাল্টা আঘাত করতে গেলে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীরা ওই কনোলিকে আটক করে। তবে এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রীতিমতো ভাইরাল হয়, আর ‘এগবয়’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে কনোলি।
সিনেটরের মাথায় ডিম ভেঙে আটক হওয়া কিশোর উইল কনোলিকে ছেড়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ। অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এএপি) এক খবরে বলা হয়েছে, ফ্রাসার অ্যানিংয়ের মাথা ডিম ভাঙার ঘটনায় আটক কনোলিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না দিয়েই তাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।