১০ মিনিটের কাল বৈশাখী ঝড়ে কমলগঞ্জ লন্ডভন্ড ৫ শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত : বজ্রপাতে মহিষের মৃত্যুঃ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা: রেল ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ॥

প্রকাশিত: ৭:৫৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে রবিবার দুপুরে বয়ে যাওয়া আকষ্মিক কালবৈশাখি ঝড়ের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কালবৈশাখি ঝড়ের তান্ডবে কমলগঞ্জ পৌরসভা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় অর্ধসহ¯্রাধিক বাড়ী-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এসময়ে বজ্রপাতে কেওলার হাওরে পতনঊষার গ্রামের রশিদ মিয়ার প্রায় ৭০ হাজার টাকা ১টি মহিষের মৃত্যু হয়েছে। শত শত গাছ উপরে পরে শমশেরনগর-কুলাউড়া সড়ক পথে আড়াইঘন্টা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। অপরদিকে আখাউড়া-সিলেট রেলপথের শমসেরনগর এয়ারপোর্ট রোডে ব্যাপক গাছ পড়ায় ও লাউয়াছড়া পাহাড়ে রেল লাইনের উপর গাছ পড়ায় রেল যোগাযোগ কিছু সময় বন্ধ ছিল। এসময় ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ও সিলেটগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া ষ্টেশনে আটকা পড়েছে ছিল।

বৈদ্যুতিক লাইনের তার ছিড়ে ও খুঁটি ভেঙ্গে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও। স্থানীয়রা জানান, প্রবল গতিতে আসা কালবৈশাখি ঝড়ে পৌরসভাসহ উপজেলার মুন্সিবাজার, রহিমপুর, শমশেরনগর ও পতনউষার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও প্রায় আড়াই শতাধিক ঘর-বাড়ি। রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ে। বাড়িঘর, রাস্তার পাশে শত শত গাছ উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী, শমশেরনগর বিমান ইউনিটরে সদস্যবৃন্দ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছ সরিয়ে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হচ্ছে। শমশেরনগর বিমান বাহিনী এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক তার দুমড়ে মুচড়ে ও খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ জানান,ঝড়ে পৌর এলাকায় প্রায় ৩টি সম্পূর্ণ ও ৫০টি অর্ধ বিধ্বস্ত হয়েছ্।ে পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নারায়ন মল্লিক সাগর বলেন, ইউনিয়নের প্রায় ২ শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও ৩ শতাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। পুরো তথ্য সংগ্রহ করতে আরও কিছু সময় লাগবে। মুন্সীবাজার ইউপি সদস্য সফিক মিয়া বলেন, ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে, তবে পুরোপুরি তথ্যাদি সংগ্রহ করা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোবারক হোসেন সরকার বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের পরপরই একশত স্থানের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছগাছালি ভেঙ্গে তার ছিড়ে ও লাইন মাটিতে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর আসছে। কুলাউড়া-ফেঞ্চুগঞ্জ লাইনেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সবকটি স্থান পরীক্ষা করে পুরো ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করতে আরও কিছু সময় লাগবে।
শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ বলেন, লাইন সচল রয়েছে। রেলপথের যেখানে গাছ পড়েছে সেসব গাছ কেটে পরিস্কার করা হচ্ছে। তবে কোথাও ট্রেন আটকা পড়লে লোকজন গাছ সরিয়ে রেলপথ ক্লিয়ার করে দিচ্ছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কমলগঞ্জ পৌরসভা,পতনঊষার ও মুন্সিবাজার সহ বিভিন্ন স্থান থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে পুরোপুরি তথ্য পেতে কিছু সময় লাগবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত সুমি আক্তার বলেন, বিষয়টি জানেন তবে,ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা আসলে পরে ব্যবস্থা করা হবে।