স্টাফ রিপোর্টার: মণিপুরি রাস উৎসব দেখতে বের হয়ে গত ১৯ নভেম্বর শুক্রবার রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানে পশ্চিম লাইন নিজ বাড়ি থেকে বের হয়েছিল চা শ্রমিক রাসেল মিয়া (২৮)। পরদিন শনিবার দুপুরে বাড়ির পাশে আমঘাট নামক পাহাড়ি ছড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের ৬ দিন পর সূত্রহীন এই হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করে মূল হত্যাকারীসহ ২ জনকে বৃহস্পতিবার রাতে কমলগঞ্জ থানার পুলিশ আটক করেছে। আটকৃতরা হলো পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম পাড়ার দুলাল মুন্ডা (৩২) ও তার সহযোগী রঞ্জিত কুর্মী (৩০)।
পুলিশ উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, আলোচিত এই মামলাটি ছিল একেবারেই ক্লু-ছাড়া। কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান-এর নির্দেশনায় হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করি। মামলার তদন্ত শুরুর মাত্র ৬ দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইন এলাকার মাংরা মুন্ডার ছেলে দুলাল মুন্ডা ও তার সহযোগী রঞ্জিত কুর্মীকে আটক করা হয়। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে রাতেই পুলিশ তাদের দু’জনকে মৌলভীবাজার মূখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের কাছে উপস্থিত করলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধীর মাধ্যমে কি কারণে এই হত্যাকান্ড ঘটনা ঘটায় তার বর্ণনা দেয়।
মূল আসামী দুলাল মুন্ডা জানায়, হত্যাকান্ডের সপ্তাহ দশেক আগে নিহত রাসেলের খালাতো ভাই মন্নানের সাথে রাস্তায় সিএনজি অটো পার্কিং নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরে রাসেলের সাথেও আমার বাকবিতন্ডা হলে সে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। তখন থেকে আমি ও বন্ধু রঞ্জিত রাসেলকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকি।
উল্লেখ্য,গত শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) মণিপুরি মহারাসলীলা উৎসবের রাত ১২ টার দিকে রাসেলের সাথে তাদের দেখা হলে তাকে ফুসলিয়ে মদ্পান করিয়ে পাত্রখোলা চা বাগান এর পাশে পশ্চিম লাইন আমঘাট নামক স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে রাত দেড়টার দিকে রঞ্জিত রাসেলের পা চেপে ধরে আর দুলাল তার ঘার ভেঙে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ পাহাড়ি ছড়ায় ফেলে চলে যায়।
কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা রাসেল হত্যাকান্ডে দুই আসামীকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ উদ্ধারকালেই রাসেলের বাবা বাচ্চু মিয়া ঐদিন সন্ধ্যায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিল। এ অভিযোগের তদন্তকালে দুলাল মুন্ডা ও রঞ্জিতকে আটক করা হয়েছে। আটেকের পরই তারা হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।