আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আমাজনের গভীর জঙ্গলে প্লেন বিধ্বস্তের ৪০ দিন পর চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের এই বেঁচে যাওয়াকে অলৌকিক ঘটনা বলা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রাপ্তবয়স্ক তিন আরোহী।
জানা যায়, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আমাজনের কলম্বিয়া অংশে। কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো শনিবার এক টুইটে বলেছেন, দেশের জন্য আনন্দের খবর। কলম্বিয়ান জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া চার শিশুকে জীবিত পাওয়া গেছে।
গত ১ মে আমাজনের গভীর জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয় প্লেনটি। এতে প্রাপ্তবয়স্ক তিন আরোহী নিহত হন এবং নিখোঁজ হয় চার শিশু। তাদের সবচেয়ে বড়জনের বয়স মাত্র ১৩ বছর। বাকিদের বয়স নয় বছর, চার বছর ও ১২ মাস মাত্র।
গত ১৭ মে এক টুইটে কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, দুর্ঘটনার দু’সপ্তাহ পর ওই চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পরে সেই টুইট তিনি ডিলিট করে দেন এবং জানান, শিশুদের উদ্ধারের বিষয়টি ‘অনিশ্চিত’।
দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধারে প্রশিক্ষিত কুকুরসহ শতাধিক সৈন্য পাঠানো হয়েছিল জঙ্গলে। উদ্ধারকারীদের বিশ্বাস ছিল, দুর্ঘটনার পর থেকে দক্ষিণ ক্যাকুয়েটা বিভাগের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছিল তারা।
সশস্ত্র বাহিনী জানায়, উদ্ধারকারীরা লাঠি ও ডালপালা দিয়ে তৈরি ঘরের মতো একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খুঁজে পেলে বিশ্বাস করতে থাকেন, সেখানে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা রয়েছে। এরপর অনুসন্ধান প্রচেষ্টা আরো জোরদার করা হয়।
সশস্ত্র বাহিনী প্রকাশিত ছবিতে জঙ্গলের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রের ডালপালার সঙ্গে একটি কাঁচি এবং চুল বাঁধার ফিতা দেখতে পাওয়া যায়। এর আগে বাচ্চাদের পানির বোতল এবং একটি আধা-খাওয়া ফল খুঁজে পেয়েছিলেন উদ্ধারকারীরা।
এর মধ্যে উদ্ধার করা হয় প্লেনের পাইলট এবং দুই প্রাপ্তবয়স্কের মরদেহ। তারা জঙ্গলের ভেতর কোনো অবস্থান থেকে কলম্বিয়ার আমাজন রেইনফরেস্টের অন্যতম প্রধান শহর সান জোসে দেল গুয়াভিয়ারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন। নিহতদের মধ্যে ঐ চার শিশুর মা-ও ছিলেন।
শুক্রবার পেত্রো সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শিশুরা একসঙ্গে ছিল। জঙ্গলের ভেতর তারা নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করছিল।
কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেন, শিশুরা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। চিকিৎসকরা তাদের পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে তাদের খুঁজে পাওয়া গেছে, এতে আমি দারুণ খুশি।
সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা