ফলোআপ: কমলগঞ্জে বিউটি পার্লার থেকে উধাও হওয়া প্রেমিক যুগল ৫ দিনের মাথায় আটক ॥ থানায় অপহরন মামলা

প্রকাশিত: ৫:৩৪ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০১৯

ডেস্ক নিউজ: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সদর ইউনিয়নের বালিগাঁও গ্রামের কনের বাবা নতু দে এর মেয়ে ফাল্গনী দে (১৭) এর বিয়ে বড়লেখা উপজেলার ইনাইনগর গ্রামের ব্যবসায়ী রিংকু দে-র সাথে ঠিক হয়েছিল। গত ৬ মে সোমবার রাতে যখন বিয়ের সব আয়োজন চলছিল। সন্ধ্যায় কমলগঞ্জের ভানুগাছ বাজারের অনন্যা বিউটি পার্লারে আসার পর মুসলিম প্রেমিক আলাউদ্দীন (২০) নিয়ে উধাও হয়ে যায় কনে ফাল্গুনী। এ দিকে সন্ধ্যায় বড়লেখা থেকে বরযাত্রী নিয়ে বর যখন কমলগঞ্জ বালিগাঁও গ্রামে কনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে ঘটনা শুনে মাঝ পথ থেকে ফিরে রাজনগর উপজেলা থেকে অনত্র বিয়ে করে ফিরে যায় বর পক্ষ।
০৯ মে বৃহস্পতিবার কনের বাবা নতু দে (৪৬) মেয়ে ফাল্গুনীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তিন জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা আরও ৩/৪ জনকে বিবাদী করে কমলগঞ্জ থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার রাতেই ইসলামপুর ইউনিয়ন থেকে আত্মগোপনে থাকা প্রেমিক যুগলকে আটক করে পুলিশ কমলগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

মেয়ের বাবা নতু দে বলেন-আমার মেয়ে অপ্রাপ্ত হওয়া সত্বেও আলাউদ্দীনের হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি ভাল পাত্র পেয়ে মেয়েকে বিয়ে দিতে উদ্যোগ নিই। আমি ভাবতে পারেননি এভাবে বিউটি পার্লার থেকে আলাউদ্দীন আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাবে। আমি এ ঘটনায় আলাউদ্দিন, তার ভাই নিজাম উদ্দিনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অপহরন মামলা করেছি।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ পুজা উদ্যাপন পরিষদ কমলগঞ্জ ইউনিয়ন শাখার সহ-সভাপতি তপন দে, সাধারণ সম্পাদক প্রত্যুষ সিংহ, উত্তর বালিগাঁও যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ সিংহ, সম্পাদক নিধু সিংহ, তরুন সনাতনী সংঘ (টিএসএস) এর সভাপতি রাজু দত্ত এ ঘটনার তীব্র নিন্দাসহ ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। নতুবা জোরালো আন্দোলনে যাবেন বলে জানান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক চম্পক দাম বলেন, মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক। মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৩০ ধারায় মামলা নং-০৩ দায়ের করেন। মেয়েটিকে বোঝানো হচ্ছে, সে রাজি হলে তার পরিবারের জিম্মায় তাকে দেওয়া হবে। তবে মেয়েটি নিজ ইচ্ছেতে পালিয়েছে বলে সে মা বাবার কাছে যেতে চাচ্ছে না। এখন মেয়েকে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে কোর্টের মাধ্যমে তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে দেওয়া হবে। আর ছেলেকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার পরদির্শক (তদন্ত) সুধীন চন্দ্র দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়ে হিন্দু আর ছেলে মুসলিম বলে বিষয়টি খুবই সংবেদনশীল। এ নিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে। তাই পুলিশ সতর্কতা ও গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখছে।