কমলগঞ্জে গৃহ নির্মাণ করতে বন্ধ করা হলো সরকারী কালভার্টের মুখ! জনর্দূভোগে এলাকাবাসী

স্টাফ রিপোর্টার: নিজ গৃহ নির্মাণ করতে সরকারী অর্থায়নে নির্মিত কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দিয়েছের স্থানীয় এক জমির মালিক। এতে অল্প বৃষ্টির পানিতে ফসলি জমিন চলাচলের রাস্তা তলিয়ে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টির কারণে
জনর্দূভোগে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীর এমন অভিযোগ উঠেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের তেতইগাঁও গ্রামে । সরকারী অর্থায়নে নির্মিত কালভাটের্র মুখ বন্ধ করে ফসলি জমি ভরাট করে গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন জমির মালিক। কালভাটের মুখ বন্ধ থাকায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতে গ্রামে ঝলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
গ্রামবাসীর অভিযোগে ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে সরেজমিন তেতইগাঁও গ্রাম ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
তেতইগাঁও গ্রামের জনৈক বিদ্যামনি সিংহ তার বোনের ধানি জমি ভরাট করে সেখানে বোনের জন্য একটি গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। গত শুষ্ক মৌসুমে ধানি জমি ভরাট করার সাথে সাথে একটি কালভার্টের মুখও ভরাট করে ফেলা হয়। ফলে সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতে রাস্তার ওপর দিক থেকে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে তেতইগাঁও গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে যায়। ধানি জমির সাথে গ্রাম্য রাস্তার অনেকখানি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। এতে গ্রামবাসীরা জনদূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এবিষয়ে বিদ্যামনি সিংহ বলেন, উল্লেখিত ধানি জমিতে তার এক বোনের জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করতেই মাটি ভরাট করা হয়েছে। আর কালভার্টটির জমির ঠিক মাঝামাঝি পড়ে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ধর্মীয় মতে ঘরের নিচ দিয়ে কোনভাবে পানির নালা রাখা ঠিক নয়। আর কালভার্ট বন্ধ থাকায় পানিষ্কাশন বন্ধসহ জলাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেন তিনি। এজন্য তিনি এ নিয়ে গ্রামের মুরব্বীসহ গ্রামবাসীদের নিয়ে সামাজিকভাবে বসেছিলেন কিভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু রাখা যায় তার সহায়তা চাইতে। তবে গ্রামবাসীরা তাকে কোন সহযোগিতা করেনি। তিনি আরও বলেন, যেহেতু এটি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা সমাধানে তিনি চিন্তাভাবনা করছেন।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, নিজের জমিও ভরাট করলে প্রথমে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের সরকারি অনুমতি নিতে হয়। তাছাড়া যেহেতু ঘটনাস্থলে সরকারি রাস্তার ওপর একটি কালভার্ট রয়েছে সে কালভার্ট দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে ধানি জমি ভরাট করতে হয়। এ ধরনের কোন বিধি নিষেধ না মেনেই গৃহ নির্মাণে ধানি জমি ভরাটের সাথে কালভাটের্র মুখও ভরাট করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্কুল শিক্ষক ও একজন কৃষক বলেন, কালভাটের্র মুখ ভরাট করায় তারা আদমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে থাকায় এ অভিযোগ নিয়ে এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
আদমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, তিনি অনেক দিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ছিলেন। গত ২৪ জুন তিনি দেশে ফিরেছেন। অভিযোগ করা হলে তার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে থাকতে পারে। তারপরও তিনি তা খতিয়ে দেখে সমস্যার সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নিবেন বলেও জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, কৃষি জমি হোক আর অন্য জমি হোক তার শ্রেণি পরিবর্তনে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করতে হয়। আর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হিসেবে তিনি সরেজমিন তদন্তক্রমে তার প্রতিবেদন দিলে শ্রেণি পরিবর্তনের পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এখানে সরকারি অনুমতি না নিয়ে কোনভাবে মাটি ভরাট করা ঠিক হয়নি। তার ওপর কালভার্টের মুখ ভরাট করে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়েছে সেটা সম্পুর্ন বেআইনি। সরেজমিন তদন্তক্রমে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।