
কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: টমেটো ক্ষেতে বাঁশ দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রথম দফা স্হানীয় ইউপি সদস্যের সামনেই এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মধ্যে কাঠের টুকরোর আঘাতে প্রাথমিকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে আহত হন সোহেল মিয়া (৩৫)। এ ঘটনার খবর পেয়ে সুহেল মিয়ার নিকট আত্নীয়রা হামলা চালিয়ে মুহিদ মিয়া (২৮) নামে এক ব্যক্তিকে গনধোলাই দিয়ে গুরুতর আহত করে।
এদিকে আহত সুহেল মিয়াকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে ও মুহিদ মিয়াকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। গত ২৪ আগষ্ট শনিবার বিকালে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের হেরেংগাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হেরেংগা বাজারের প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী তাহির মিয়া বলেন, আমি ও ইউপি সদস্য আমার দোকানে বসা ছিলাম এমন সময় মুহিদ মিয়া ও সুহেলের মধ্যে টমেটো ক্ষেতের বাঁশ দেয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় মুহিদ মিয়ার হাতে থাকা দায়ের কাঠের হাতল দিয়ে সোহেলের মাথায় আঘাত করলে সুহেল রক্তাক্ত জখম হয়, পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আছকর খান মুহিতকে সরিয়ে দিয়ে সোহেল কে চিকিতসার ব্যবস্থা করেন। এ ঘটনায় থানায় দু’পক্ষের পৃথক মামলা হয়েছে। এদিকে ঘটনা খবর পেয়ে আহত সোহেল মিয়ার লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে মুহিদের উপর হামলা করেছে বলে শুনছি। এ ঘটনায় আহত মুহিদ মিয়া ও তার বাবা পুতুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আছকর খাঁন এর উপস্থিতিতেই মুহিদকে বনগাঁও গ্রামের চান্দু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া ও তার আত্নীয় স্বজন তাকে ঘর থেকে টেনে হিচড়ে বের করে রাস্তার পাশে ধানক্ষেতে ফেলে বেধড়ক মারপিট করে মুহিদের মা আকারুন বেগম ছেলেকে বাঁচাতে ইউপি সদস্য আছকর খাঁনকে আকুতি মিনতি করলেও তিনি কর্ণপাত করেন নি বলে অভিযোগ তুলেছেন।
ঘটনার পর স্থানীয়রা মুহিদ মিয়াকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে আদমপুর ইউপি সদস্য আছকর খাঁন বলেন, আমি এবং তাহির মিয়ার সম্মুখে তাহির মিয়ার দোকানের ভেতরেই কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মুহিদের হাতে থাকা কাট দিয়ে সোহেলকে আঘাত করে। আমি তখন মুহিদকে সরিয়ে যাওয়ার জন্য বলি এবং মুহিদকে চিকিতসা করাতে ব্যস্থ হয়ে পড়ি। পরবর্তী ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা ছিলনা। তারপরও মুহিদকে বাচানো চেষ্টা করেছি, কিন্ত মুহিদের পরিবার একটি কু-চক্রি মহলের সহযোগীতায় আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলেছে। আমি তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সোহেল মিয়ার পিতা চান্দু মিয়া বলেন, আরক জনের সাথে কথারত অবস্হায় মুহিদ আমার ছেলে সোহেল এর মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করে। খবর পেয়ে আমার আত্মীয় স্বজন ছুটে আসলে মুহিদ তাদের উপর ক্ষেপে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ইউপি সদস্য আছকর খাঁন এ হামলার সাথে কোনভাবেই সরাসরি জড়িত নন, তিনি আমার ছেলের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বলে দাবি করেন। এ ঘটনায় প্রথমে মুহিদ মিয়ার মা আকারুন বেগম বাদি হয়ে ২৬ আগষ্ট ইউপি সদস্য আছকর খানসহ ১৪ জনকে আসামী করে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরদিন ২৭ আগষ্ট রজব আলী বাদি হয়ে আহত মুহিদ মিয়াসহ ৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। দুই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কমলগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক শহীদুর রহমান জানান, পৃথক দু’টি মামলা রয়েছে। তবে মুহিদ মিয়া বেশি জখমপ্রাপ্ত রয়েছেন। তদন্তক্রমে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।