কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ‘কাং’ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ মণিপুরী কাং ফেডারেশনের আয়োজনে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নয়াপত্তন গ্রামে কাংশং স্থানে মাস ব্যাপী এ টুর্নামেন্টের খেলা শেষে শনিবার বিকালে ফাইনাল খেলা ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক থোঙাম নবকুমার সিংহের সভাপতিত্বে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বর্ণালী পাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রইছ আল রেজুয়ান, কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ জুয়েল আহমেদ, আদমপুর ইউনিয়ণ পরিষদের চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন, আলীনগর ইউনিয়ণ পরিষদের চেয়ারম্যান নিয়াজ মোর্শেদ রাজু, মনিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সের সভাপতি জয়ন্ত সিংহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিপুরি সাহিত্য সংসদের সভাপতি একে শেরামকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
বাংলাদেশ মণিপুরী কাং ফেডারেল এর সভাপতি ইবংহাল সিংহ শ্যামল জানান, কমলগঞ্জ উপজেলায় ১৯৯৭ সাল থেকে ‘কাং’ খেলা শুরু হয়। প্রাচীনকাল থেকেই মণিপুরী সমাজে কাং খেলার প্রচলন ছিল। দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ভারতের মণিপুর রাজত্বকারী রাজা লোইতোংবার শাসনামলে এ ‘কাং’ খেলার উদ্ভব ঘটে। বাংলাদেশের বসবাসরত মণিপুরী সম্প্রদায়ের বাইরেও ভারতের আসাম, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর রাজ্যে এই খেলাটির প্রচলন রয়েছে। খেলাটি পরিচিতি পেয়েছে মিয়ানমার, থাইল্যান্ডসহ আরও কয়েকটি দেশে। তবে এ খেলাটি এখনও জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পায়নি। াংলাদেশ মণিপুরি কাং ফেডারেশনের সভাপতি ইবুংহাল সিংহ শ্যামল বলেন, ‘প্রতিবছর কমলগঞ্জে মণিপুরি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ‘কাং’ খেলার টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর নিংতম কাং টুর্নামেন্টে মণিপুরী সম্প্রদায়ের পুরুষদের ৮টি দল ও মহিলাদের ৫টি দল অংশগ্রহণ করছে। গত ৬ জানুয়ারি থেকে প্রতি শুক্রবার পুরুষের এবং শনিবার মেয়েদের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাং খেলার প্রধান উপকরণ হিসেবে হাতির দাঁত, কচ্ছপের বুকের খোল, মহিষের শিং দিয়ে তৈরি কাং ব্যবহার হয়। ৭টি সরলরেখায় উভয় দলের ৭জন করে খেলোয়াড় পরস্পরের বিপরীতে থাকেন। একজন আম্পায়ার খেলা পরিচালনা করেন। স্কোরবোর্ড থাকে। মসৃণ কোর্টে কাং (এক ধরনের ফাইবারের তৈরি প্লেট) বিপক্ষের খেলোয়াড়দের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়।’