কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার শিবচতুর্দশী উপলক্ষে মহাশিবরাত্রি ব্রত উদযাপন করা হয়েছে। শমশেরনগর চা বাগান শিবমন্দির, আলীনগর ইউনিয়নের যোগীবিল শৈব যোগী সংঘ, মাধবপুর ইউনিয়নের শিববাজারে জাগ্রত শিব মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসুচী উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আলীনগর ইউনিয়নের যোগীবিল শৈব যোগী সংঘের আয়োজনে ১৩তম বার্ষিকী মহাশিবরাত্রীব্রত উপলক্ষে ২ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে “যোগীকুঞ্জ শিবাঙ্গনে” পরমেশ্বর শিবের বৈদিক প্রার্থনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ করা হয়।
শৈব যোগী সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আচার্য ডা. শ্রীনিবাস দেবনাথের সঞ্চালনায় শোভাযাত্রায় বক্তব্য রাখেন নাথ কল্যাণ সমিতি বাংলাদেশ কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি ক্ষিরোদ চন্দ্র দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক পিন্টু দেবনাথ, সাংগঠনিক সম্পাদক নিরোদ রঞ্জন দেবনাথ ও আলীনগর ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
এরপর শুরু হয় এক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা শত-সহস্র ভক্তবৃন্দের ”হর হর মহাদেব” ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে পরিবেশ। পরমেশ্বর শিবের দিব্য নাম কীর্তনের মাধ্যমে শোভাযাত্রাটি প্রায় ৫ কিলোমিটার আশপাশের অঞ্চল প্রদক্ষিণ করে।
উল্লেখ্য, মহাশিবরাত্রি সনাতন বৈদিক ধর্মের অন্যতম আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান। কেননা, বেদ-বেদান্তে পরমেশ্বর ভগবান শিব সর্বোচ্চ সত্বা হিসেবে বর্ণিত হয়েছেন। তিনি অদ্বিতীয় পরম সত্বা। সেজন্য বেদান্তে বলা হয়েছে- “শিব এব কেবলো।” শিবরাত্রি মহাব্রত পালন করলে পরমপ্রভু সদাশিব প্রসন্ন হন।
শৈব যোগী সংঘ ১৩ বছর ধরে এই মহাব্রত পালন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের আয়োজন। বিশ্বজগতের কল্যাণার্থে তথা আলোকিত আধ্যাত্মিক জীবন গঠনের উদ্দেশ্যেই শিবরাত্রি মহাব্রত উদযাপন করা হয়। এদিকে মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে শৈব যোগী সংঘ লক্ষীপুর শাখা ও সিদ্ধেশ্বরপুর শাখা যথাযথ নিয়মে মহাশিবরাত্রি পালন করবে বলে জানা গেছে।
এদিকে শিবচতুর্দশী উপলক্ষে মণিপুরি দিবারাস উৎসব মঙ্গলবার (০১ মার্চ) দুপুর ১২টায় মাধবপুর ইউনিয়নের শিববাজারে জাগ্রত শিব মন্দির মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। শমশেরনগর চা বাগান শিবমন্দির প্রাঙ্গণে শিবচতুর্দশী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে এক বিরাট মেলাও বসেছে। হাজার হাজার ভক্তবৃন্দের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।