ধলাই ডেস্ক: শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ব্যবহার অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে আছে কোটি টাকার সেতু। এতে করে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আশপাশের ১৫ গ্রামের হাজারো মানুষ। ১৬ বছর আগে রাস্তা সংস্কার না করেই সেতুটি নির্মাণ করেছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
স্থানীয়রা বলছেন, এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে বারবার জানানো হলেও কোনো সুখের খবর নেই। মানুষ যদি চলাচল করতে না পারে তাহলে ব্রিজটি কাদের জন্য তৈরি করা হলো- এলাকাবাসীর প্রশ্ন।
তবে উচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন সাপেক্ষে চলতি বছরই দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা এলজিইডি বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, উপজেলার সদর ইউপির মাটিয়াপাড়া সিএনবি রোড থেকে সারিকালিনগর, গজারমারী হয়ে বাগেরভিটা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। ওইসব এলাকার রাস্তাগুলো সংস্কার ও প্রশস্ত না করেই ২০০৪ সালে গজারমারী এলাকায় এলজিইডি প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে একটি ব্রিজ। দু’পাশে রাস্তা না থাকায় ওই ব্রিজটি এখন কোনো কাজেই আসছে না গ্রামবাসীর।
স্থানীয় কৃষক মহব্বত আলী ও কৃষাণী পারুল বেগম বলেন, বর্ষা মৌসুমে ওই পথে যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তখন মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন হয়ে ওঠে নৌকা। এছাড়া এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও গবাদী পশু পারাপারে সীমাহীন বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় কৃষকদের।
তারা জানান, ওই পথে ১৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, যাতায়াতের ওই অংশে অন্তত ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রয়েছে ৩-৪টি বাজার। দেশ স্বাধীনের পর থেকেই স্থানীয়দের তরফে রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি উঠলেও তা আজো বাস্তবায়িত হয়নি। বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তাটি সংস্কারের আশ্বাসই পাওয়া গেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাস্তাটি পাকাকরণের অভাবে পথচারীরা যেমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অন্যদিকে কোমলমতী শিক্ষার্থীরাও রয়েছে বিপাকে।
ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে রাস্তাটি তলিয়ে যায়। শুধু ভেসে থাকে ব্রিজটি। ওইসময় গ্রামবাসীর চলাচলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, এ এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার, প্রশস্ত ও পাকা না করেই মাঝপথে বিশাল আকারের একটি ব্রিজ নির্মাণ করেছে এলজিইডি। ১৬ বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে ওই ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও তা এলাকাবাসীর কাজে আসছে না।
জেলা এলজিইডি কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী জাহানারা পারভীন বলেন, ওই রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম ঢাকা থেকে এসে পরিদর্শণ করে গেছেন। এরইমধ্যে প্রাক্কলন তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। এখন জুলাই বা আগস্ট মাসে অনুমোদন পাওয়া গেলে এ বছরই দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানান তিনি ।
সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…