গ্রাম পুলিশের ধর্ষণে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা, চাপে গর্ভপাত

প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২০
ছবি সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: নওগাঁর বদলগাছীতে গ্রাম পুলিশের অব্যাহত ধর্ষণে এক স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানার পর ভুক্তভোগীর পরিবার সম্মানের ভয়ে ও প্রভাবশালীদের চাপে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য হন।

অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ বাবুল হোসেন ফেলু উপজেলার পাহাড়পুর ইউপিতে দায়িত্বরত এবং একই ইউপির ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা। আর ভুক্তভোগী স্থানীয় একটি মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। গ্রাম পুলিশ ওই ছাত্রীর প্রতিবেশী ও সম্পর্কে চাচা হন।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলছাত্রীর পরিবারটি গরিব। জীবিকার তাগিদে ওই ছাত্রীর বাবা ঢাকায় রিকশা চালান। ভুক্তভোগীর বাবার প্রতিবেশী ফুফাতো ভাই গ্রাম পুলিশ বাবুল হোসেন ফেলু এ সুযোগে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে পাঁচ মাস ধরে ধর্ষণ করে আসছে। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই স্কুলছাত্রী। এর পর স্কুলছাত্রী তাকে বিয়ের কথা বললে কোনো সাড়া দিতো না বাবুল হোসেন। ভুক্তভোগীর পরিবার মান সম্মানের ভয়ে ও প্রভাবশালীদের চাপে গর্ভপাত ঘটাতে গত ১১ জুন জয়পুরহাট জেলায় নিয়ে যায়। সেখান এক বাড়িতে হাতুড়ে চিকিৎক দিয়ে তার গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করা হয়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে এবং মীমাংসার জন্য চাপ দিতে থাকে অভিযুক্ত ও প্রভাবশালীমহল। এরপর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

গত শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় সালেম মোহাম্মদ, আজিজার এবং অভিযুক্তের বড় ভাই সাইদুল হোসেন মেলেটারি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে সমঝোতার জন্য প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ভুক্তভোগীর পরিবার সমঝোতা মানতে নারাজ। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ বাবুল হোসেন ফেলু এলাকায় নেই। ওই ছাত্রীর পরিবার এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, পাঁচ মাস আগে ভাত রান্না করার কথা বলে দুপুর ১২টার দিকে আমাকে বাড়িতে নিয়ে যায় গ্রাম পুলিশ বাবুল হোসেন ফেলু। বাড়িতে কেউ না থাকায় ধর্ষণ করে এবং কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এরপর আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকার বার শারীরিক সম্পর্ক করে। আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বিয়ের জন্য তাকে বারবার বলার পরও কোনো সাড়া মিলতো না। এরপর মাকে বিষয়টি জানানো হয়। মান সম্মানের ভয়ে মা আর দাদি গত ১১ জুন জয়পুরহাট জেলায় এক হাতুড়ে ডাক্তারের বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রথম দিন না হওয়ায় পরদিন ১২ জুন আবারো সেখানে গিয়ে গর্ভপাত করে বাচ্চাটি নষ্ট করা হয়। ঘটনার পর থেকে প্রভাবশালীরা মীমাংসা ও ধামাচাপা দিতে বিভিন্নভাবে তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে গ্রাম পুলিশ বাবুল হোসেন ফেলু এলাকায় নেই। এমনকি তার ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।

অভিযুক্তের বড় ভাই সাইদুল হোসেন মেলেটারি বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার ভাইকে ফাঁসানো হচ্ছে। কিছু টাকা খসানোর জন্য আমাদের বিরুদ্ধে গুজব রটানো হচ্ছে।

পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, বাবুল হোসেন ফেলু ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা জানা নেই। তবে আরো কয়েকজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে শুনেছি। ওই গ্রাম পুলিশ যদি জড়িত থাকে তাহলে পরিষদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বদলগাছী থানার ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ বলেন, শনিবার রাতে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বাবুল হোসেন ফেলুকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামি আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…