ডেস্ক নিউজ: সেই প্রিয়মুখ, খোলা চুলে বাহারী ভাঁজ করা শাড়িতে চিরায়ত বাঙালি মেয়ে। অজানা প্রেমিকের সন্ধানে পেরেশান। প্রতীক্ষার দিন গুনে গুনে আনমনেই গেয়ে উঠেছিলেন, ‘একদিন স্বপ্নের দিন’। মনে পড়ে সেই দীপার কথা?
একদম ঠিক তাই। বলছি ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমার নায়িকা প্রিয়াঙ্কার কথা। পুরো নাম প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী। বাংলা সিনেমায় তিনি ঝলক নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ১৯৯৯ সালে। এরপর ‘চুপি চুপি’, ‘সাথী’, ‘মেমসাহেব’সহ বেশ কিছু ছবি দিয়ে বাংলা ছবিতে বাজিমাত করেছেন এই মিষ্টি নায়িকা।
অনেকদিন হয় বাংলা ছবিতে দেখা নেই প্রিয়াঙ্কার। তবে তিনি প্রিয়াঙ্কা উপেন্দ্র নামে নিয়মিতই অভিনয় করছেন কন্নড় ভাষার ছবিতে। সেখানে মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার আরও একটি নতুন ছবি। সে ছবির নাম ‘দেবাকী’। লোহিত এইচ নামে একজন নির্মাতা এটি পরিচালনা করেছেন।
এখানে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যাবে তার মেয়ে ঐশ্বরিয়াকেও। ছবিটি নিয়ে অনেক সম্ভবানার কথা শোনা যাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যমে। অনেকে ছবিটিতে বিদ্যা বালান অভিনীত ‘কাহানি’র মিল খুঁজে পাচ্ছেন।
গেল মার্চ মাসে মুক্তি পেয়েছে ছবিটির ট্রেলার। জানা গেল, চলতি বছরেই ছবিটি মুক্তি পাবে। এর আগে গত বছর তার ‘সেকেন্ড হাফ’ ছবিটি মুক্তি পায়। সেই ছবিতে এই নায়িকা একজন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
প্রসঙ্গত, টালিউডে এক সময়ের দাপুটে নায়িকা প্রিয়াঙ্কার জন্ম কলকাতায় ১৯৭৭ সালের ৭ নভেম্বর। ছোটবেলায় সিঙ্গাপুরে অনেকটা সময় কাটালেও পড়াশোনা করেছেন ক্যালকাটা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে।
১৯৯৬ সালের মিস ক্যালকাটা নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এই অভিনেত্রী ১৯৯৮ সালে বাসু চট্টোপাধ্যায়ের ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষিক্ত হন।
প্রথম ছবিতে বাংলাদেশের নায়ক ফেরদৌসের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তিনি। সেই ছবি দুই বাংলায় তুমুল সাড়া ফেলে দেয়। বাংলাদেশের দর্শকদের পাশাপাশি কলকাতার দর্শকরা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির পর থেকেই আপন করে নেন এ নায়িকাকে।
সাদামাটা বাঙালি নারীর মোহনীয় সৌন্দর্য দিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি সব যুবকের অন্তরে। ফেরদৌস-প্রিয়াঙ্কা জুটিকে নিয়ে এরপর তৈরি হয় ‘টক ঝাল মিষ্টি’, ‘চুপি চুপি’ ছবিগুলো। সেগুলো অবশ্য ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র মতো সাড়া ফেলেনি।
‘হঠাৎ বৃষ্টি’র পর ‘টক ঝাল মিষ্টি’ পর্যন্ত এরপর একে একে বাংলা, হিন্দি, তামিল, তেলেগু, কন্নড় মিলিয়ে ১২টিরও বেশি ছবি করেন। তারপর ২০০২ সালে অভিষেক পাওয়া জিতের সঙ্গে ‘সাথী’ সিনেমাতেও অভিনয় করেন। এ ছবির পর দর্শকপ্রিয়তা বেড়ে বহুগুণ হয় প্রিয়াঙ্কার।
দুই বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে এই ছবির ‘ও বন্ধু তুমি শুনতে কী পাও’ শিরোনামের গান। সেই জনপ্রিয়তার সূত্র ধরে জিৎ-প্রিয়াঙ্কা জুটি বেঁধে আরও পাঁচটি বাংলা ছবি মুক্তি পায় তাদের। তবে কোনো ছবিই আর ‘সাথী’ ছবির জনপ্রিয়তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।
তবে সবগুলো ছবিই ছিলো জনপ্রিয়। অনেকেই এই নায়িকাকে ঘিরে চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ২০১১ সালে ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান প্রিয়াঙ্কা। চলচ্চিত্রে এ অভিনেত্রীর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় সবাই ধরে নিয়েছেলেন সিনেমাকে বিদায় জানিয়েছেন।
মাঝখানে হঠাৎ শোনা গেল আবার চলচ্চিত্রে ফিরেছেন প্রিয়াংঙ্কা। তবে বাংলা ছবি নয় দক্ষিণী ছবিতে। সেখানকার কন্নড় সিনেমার সুপারস্টার উপেন্দ্রকে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন তিনি। বর্তমানে স্বামী ও দু’সন্তানকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে বসবাস করছেন।