কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা খাদ্য সামগ্রী পরিবহন ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারি এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে একটি চক্র মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের সুনছড়া থেকে অবাদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করছে। অবৈধভাবে সুনছড়া থেকে বালু উত্তোলনে সরকার হারাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব।
শনিবার (২ মে) দুপুরে সরেজমিন সুনছড়া এলাকা ঘুরে জানা যায়, স্থানীয় রশীদ উল্যা ও সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে একটি চক্র প্রতিদিন সুনছড়া চা বাগানের প্লান্টেশন এলাকা সংলগ্ন ছড়া থেকে গড়ে ১০ থেকে ১৫ ট্রাক্টর বালু উত্তোলণ করে বিক্রি করছেন। বালু শ্রমিকরা এ বিষয়ে কোন কথা না বলতে রাজি হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক গ্রামবাসী বলেন, সুনছড়া বালু ঘাট কোন ইজারা হয়নি। এ ছড়াটি চা বাগানের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের সাথে সাথে টিলার মাটিও কেটে নেওয়া হচ্ছে।
মাঝে মাঝে আলীনগর চা বাগান থেকে ব্যবস্থাপক অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে আপত্তি জানালেও বালু উত্তোলনকারীরা সে আপত্তি মানেন না। রশীদ উল্যা ও সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে এ দুটি ছড়া থেকে প্রতিদিনই বালু উত্তোলন করে চিৎলিয়া গ্রামের ভিতর দিয়ে বালু পরিবহন করে মঙ্গলপুর এলাকায় জামি রাখা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবনের কাজে বালু বিক্রি করা হয়। তারা আরও বলেন, আগে মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হত। এখন করোনাভাইরাস প্রতিরোধ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা সবাই ব্যস্ত থাকার সুযোগে সুনছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে পরিবহন করা হচ্ছে। গত বছর সুনছড়ার একটি এলাকার ঘাট ইজারা হয়েছিল ১০ লাখ টাকায়। এবার ইজারা না হওয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সরকার ১০ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করে আলীনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক এ প্রতিনিধির কাছে একটি চক্রের মাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পরিবহনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চক্রটি প্রভাবশালী বলে কোন আপত্তিতে কাজ হয় না।
এ সম্পর্কে কথা বলতে শনিবার বিকেলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী রশীদ উল্যাকে না পেয়ে তার মুঠোফোনে (০১৭১০৭১২০৩৩) কয়েক দফা চেষ্টা করলে তিনি ফোন ধরেননি।
কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, সুনছড়া বালু ঘাট সরকারিভাবে কোন ইজারা হয়নি। যারা বালু উত্তোলন করছে তা অবৈধভাবে করছে। তাছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি কর্মকর্তারা ব্যস্ত থাকার সুযোগে এই অবৈধ বালু উত্তোলন ও পরিবহন চলছে। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, ঘাট থেকে বালু উত্তোলনকালে খবর পেলে দ্রুত গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে।