কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে স্থানীয়ভাবে লিচুর ফলনও ভালো হয়েছে। দামও অনেকটা ক্রেতাদের নাগালে। তাই স্থানীয় এলাকায় উৎপাদিত রাসায়নিক ও ক্ষতিকর কীটনাশক মুক্ত লিচুই এখন ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ। স্থানীয়ভাবে লিচু উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ বছর বাদুড়, কাঠবিড়ালি ও বানরের উৎপাত ছাড়া বড় কোনো বিপর্যয় হয়নি। ঝড়ঝাপটার কবলেও খুব একটা পড়েনি। এতে লিচুচাষীরা খুশি। আরও কিছুদিন পরে অন্য জাতের ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে লিচু আসা শুরু হবে। পথচলতি ক্রেতাসাধারণ মৌসুমের শুরুতেই হাত বাড়িয়ে নিচ্ছেন নজরকাড়া মৌসুমি এই ফলকে।
কমলগঞ্জ উপজেলা উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রে জানা গেছে, বৈশাখ মাসের শেষ দিক থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর বিমানবন্দর এলাকাসহ পাহাড়ি টিলা এলাকা থেকে ছোট বড় হাট-বাজারে স্থানীয় লিচু আসা শুরু হয়। পাইকারি ও খুচরা লিচু বিক্রেতারা শমশেরনগর, ভানুগাছ বাজার, আদমপুর, মুন্সীবাজারসহ বিভিন্ন ফুটপাত, পথের মোড় এবং মৌসুমি ফল বিক্রির নির্দিষ্ট স্থানে ভ্যানগাড়ি, বেতের ঝুড়ি ও ডালাভর্তি নজরকাড়া লিচু নিয়ে বসেন।
সরেজমিনে শমশেরনগর ও ভানুগাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন সড়কের ধারে স্থানীয় লিচু বিক্রি হচ্ছে। এখন স্থানীয় জাতের লিচু বাজারে এসেছে। আকার ও ধরণভেদে ১০০ লিচু ১২০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আরও কিছুদিন পর বাজারে আসবে বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন জাতের লিচু। এগুলো বাজারে এলে লিচুর দামও কমবে। কিন্তু অন্য জেলা লিচু খেতে অনেকটা অনাগ্রহী কমলগঞ্জের লোকজন। কারণ এসব লিচুতে বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক প্রয়োগ হয়ে থাকে বলে ধারণা স্থানীয়দের। শমশেরনগর বিমানবন্দর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে কমবেশি লিচুর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল থেকেই এসব থেকে লিচু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা।
শমশেরনগর বাজারের লিচুচাষী আব্দুর রহমান বলেন, আমার বাড়িতে ৫টি লিচু গাছ রয়েছে। গাছগুলো অনেক পুরনো। প্রতি বছর অনেক লিচু হয় আমাদের গাছে। এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। প্রতি বছর পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বাজারে লিচু বিক্রি করি। পাইকাররা নিজেদের দায়িত্বে গাছ থেকে ফল পেড়ে নিচ্ছেন। এ বছর প্রায় ৫০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছি। লিচু পাইকার আং রহমান ও সুন্দর আলী বলেন, শমশেরনগর এলাকার লিচু অত্যন্ত সুস্বাদু ও রাসায়নিকমুক্ত থাকায় এর কদও বেশি। আমরা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে জেলা সদরেও লিচু বিক্রি করি।
লিচু ক্রেতা আলমগীর হোসেন, জয়নাল আবেদীন, বদরুল হাসান, নিবাস চন্দ বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় শমশেরনগর এলাকার লিচু স্বাদ ভালো, মিষ্টি আছে। দামও সহনীয়। আমি ১০০ লিচু কিনেছি ১৫০ টাকায়। দাম বেশি হলেও সমস্যা নেই কারণ লিচুগুলো রাসায়নিক মুক্ত’।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘কমলগঞ্জ উপজেলা পাহাড় টিলা বেষ্টিত এলাকার বাড়িগুলোতে অনেক পুরনো লিচুর গাছ রয়েছে। এখানে শমশেরনগর বিমানবন্দর এলাকায় লিচুর বাণিজ্যিক বাগানরও রয়েছে। এই গাছ গুলোর লিচু’র চাহিদা অনেক রয়েছে স্থানীয় বাজারে। লিচুগুলো সুস্বাদু ও রাসায়নিকমুক্ত থাকায় এর চাহিদাও বেশি’।