ডেস্ক রিপোর্ট: মৌলবীবাজারের কমলগঞ্জের রাণীর বাজারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে এ্যাসেম্বল সেন্টার। কৃষকরা তাদের নিজের উৎপাদিত পণ্য এখানে রেখে স্বাচ্ছন্দে কেনা-বেচা করতে পাচ্ছেন। এতে করে তাদের অর্থ ও সময় দুটোই কমেছে। নির্মিত এ এ্যাসেম্বল সেন্টার নির্মিত হওয়ায় আশপাশ এলাকার শতাধিক কৃষক পরিবার উপকৃত হচ্ছে। জানা যায়, সিলেট অঞ্চলের শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধকিরণ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এর অর্থায়নে সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার ৩০টি উপজেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য লাভজনক করতে কৃষক, ব্যবসায়ী, প্রক্রিয়াজাতকারী ও রপ্তানীকারকদের মধ্যে সংযোগ,পণ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১৫ সালে এ্যাসেম্বল সেন্টার তৈরী জন্য একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৩৭৫.০০ লাখ টাকা। তার মধ্যে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রানীর বাজার এ্যাসেম্বল সেন্টার অন্যতম। এ সেন্টারের নির্মাণ শেষে ১৩ মে ২০১৮ উদ্বোধন হলেও গত প্রায় ২ মাস ধরে কৃষকরা এ সেন্টার ব্যবহার করছেন। বৃহত্তর সিলেটের অন্যতম শস্যভান্ডার হচ্ছে কমলগঞ্জ উপজেলা। আর কমলগঞ্জে ফসল সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় আদমুপর,ইসলামপুর ও আলীনগর ইউনিয়নে। ৩টি ইউনিয়নের তিলকপুর, বাণীর বাজার, কান্দিগাও ,জালালপুর, হোমেরজান, ঘোরামারাসহ ২০টি গ্রামের শত শত কৃষক টমোটো, বাধাকপি ফুলকপি, মিষ্টি লাউসহ নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করেন। কিন্তু কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে নানা দুর্ভোগে পড়তেন। পর্যাপ্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তারা তেমন ন্যায মূল্য পেতেন না। এ কারণে কমলগঞ্জ উপজেলার রানীর বাজারে ১৭ শতক জায়গা নিয়ে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত নির্মিত এ্যাসেম্বল সেন্টারটি নির্মাণ করে দেয় কৃষি বিপনন অধিদপ্তর। এর ব্যয় হয় ৫৮ লাখ টাকা । এ্যাসেম্বল সেন্টার থাকায় স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত পন্য পরিষ্কারকরণ, বাছাইকরণ, গ্রেডিং করা, মোড়কীকরণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা, এবং পানি ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে এখানে এলাকার কৃষকরা ঝামেলা পোহাতে হয় না। স্থানীয় তিলকপুর গ্রামের কৃষক মাহমুদ আলী জানান, এটি নির্মিত হওয়ায় তাদের খুবই উপকার হয়েছে। তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য নিয়ে এ বাজারে আগে বসার জায়গা ছিল না। বর্তমানে এ্যাসেম্বল সেন্টার হওয়ায় বসা, ওজন পরিমাপক, পণ্যতে পানি দেয়া ও পরিষ্কার করতে কোন অসুবিধা হয় না। এ্যাসেম্বল সেন্টারেই পানির ব্যবস্থা রয়েছে। আগের চেয়ে ফসল বিক্রী বেশি হয়। বিভিন্ন জায়গা হতে ব্যবসায়ীরা এসে উৎপাদিত পন্য সমুহ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ্যাসেম্বল সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিলেট কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা মাহমুদ বিলাহ জানান, এ্যাসেম্বল সেন্টারকে কেন্দ্র করে কমলগঞ্জ উপজেলার রাণীরবাজারের কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের নিয়ে কৃষি বিপণন গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রুপে ১০জন সদস্য রয়েছে। তাদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষতা বাড়ানো হয়েছে। গ্রুপের কৃষকরা এ সেন্টারটি দেখা শুনা করবেন। রয়েছে এ্যাসেম্বল সেন্টার ব্যবস্থাপনা কমিটি। স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্য আগে বিক্রী করতে চরম দুর্ভোগে পড়তেন। পাশাপাশি বাজারজাতকরণে নানা ঝামেলায় পড়তেন কৃষকরা। কিন্তু এখন তা হয় না।