কমলগঞ্জে দূর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুরে ছাই চা বাগানের অর্ধশত বছরের সকল নথিপত্র: আহত -২

প্রকাশিত: ৫:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৯, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়ন এর ধলই চা বাগানের অফিস কার্যালয়ে দূর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুরে ছাই হয়ে গেছে কার্যালয়ে রক্ষিত অর্ধশত বছরের সকল নথিপত্র। আগুন নেভানোর চেষ্টাকালে কার্যালয়ের দুই নৈশ প্রহরী শ্রী প্রসাদ পাশী  (২৬) ও সৎ নারায়ণ রাজভর (২৫) গুরুতর আহত হয়েছেন।

বর্তমানে দু’জন সিলেট রাকিব রাবিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
চা বাগান সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিন টার দিকে অফিস কার্যালয়ের হিসাব রক্ষকের কক্ষ থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়লে বাগানের প্রধান ব্যবস্থাপকের কক্ষসহ সহকারী ব্যবস্থাপকের কক্ষ, জেনারেল কক্ষ, টিল্লাকার্কের কক্ষসহ পাঁচ টি কক্ষ সম্পুর্নভাবে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
গভীররাতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় অফিসের কোন নথিপত্র বেড় করা সম্ভব হয়নি। পরে স্থানীয় শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চার টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে যায় অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে অফিস কার্যালয়ের পাশে স্টোররুমে ডিউটিরত নৈশ প্রহরী বাবলু ফুলমালী জানায় স্টোর রুমের বারান্দায় আমি ঘুমিয়ে ছিলাম রাত পৌনে তিনটার দিকে মুখোশ পরা একদল লোক আমাকে বেধে ফেলে, তাদের সাথে থাকা অন্যলোক অফিসের দরজার কাঁচ ভেঙে অফিসের ভেতরে আগুন দেয়। আগুন যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন আমাকে বেধে রেখে পালিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা । অফিসের বারান্দায় ডিউটিতে থাকা নৈশ প্রহরী শ্রী প্রসাদ পাশী  ও সৎ নারায়ণ রাজভর এর শরীর পুড়ে গেছে। দুজন আহত অবস্থায় আমার কাছে এসে আমার হাত পায়ের বাধন খুলে দিলে আমি সাথে সাথে গিয়ে কারখানায় থাকা সায়রন ও পাগলা ঘন্টা পিটাই। ততক্ষণে আগুন  ছড়িয়ে পড়েছিলো। পরে বাগানের চা শ্রমিকরা এসে ঘন্টা খানেক চেষ্টা করে আগুন নেভায়।
ধলই চা বাগানের প্রধান ব্যবস্থাপক আজগর আলী খান এ প্রতিনিধিকে জানান, ৭১ সালের পর থেকে প্রায় অর্ধশত বছরের সকল নথিপত্র অফিস কার্যালয়ে রক্ষিত ছিলো যা পুরোপুরি পুরে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে আমাদের অপুরনীয় ক্ষতি হয়ে গেলো কিভাবে তা পুষিয়ে উঠবো বুঝতেছিনা। এই কার্যালয় থেকেই বাগানের চা শ্রমিকদের রুটি রুজির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।  চা বাগানের ইতিহাসে এটাই প্রথম চা কার্যালয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটানা ঘটলো।
 এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রামভজন কৈরি, কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান , মনু ধলাই ভ্যালী সভাপতি ধনা বাউরীসহ চা বাগানের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এবং মাধবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন । এসময় চা শ্রমিকরা প্রকৃতি অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তীর দাবী জানায়। এ ঘটনায় চা বাগানের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বাগান কর্তৃপক্ষ মামলা করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা ববস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য দু’মাস পূর্বে ও  ধলই চা বাগেনের অফিস কার্যালয়ের হিসাব রক্ষকের কক্ষে রাতে আগুন দিয়ে ছিলো দূর্বৃত্তরা। তখন তেমন কোন ক্ষতি না হলেও এবারের আগুনে সম্পুর্ন পুরে ছাই হয়ে গেলো। এই আগুন লাগার ঘটানাটি পূর্ব পরিকল্পিত  বলেই মনে করছেন অনেকে। পুলিশ সটিক তদন্ত করলেই আসল রহস্য উদঘাটন হবে।