কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: করোনা সংক্রমনের কারণে টানা ১৮ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সরকারি নির্দেশনায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলছে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এজন্য সারা দেশের মত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপযোগী করতে ঝোঁপ ঝাড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, শ্রেণী কক্ষ ধোয়া মুছাসহ অগ্রিম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর ১৮ মার্চ থেকে সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। এরপর অনলাইনে পাঠদান শুরু হলেও সারাদেশে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী নানা কারণে অনলাইনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। মাঝে কয়েক দফা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার উদ্যোগ নিয়ে করোনা সংক্রমণ না কমার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্টান খোলা সম্ভব হয়নি। তবে এখন করোনা সংক্রমণ কমার কারণে অতি স¤প্রতি সরকারি সিদ্ধান্তে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে কিভাবে শ্রেণি ওয়াজ পাঠদান করতে হবে তারও নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই আগামী ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শিক্ষা উপযোগী করতে হবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পক্ষ থেকে।
এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কমলগঞ্জে মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ভান্ডারীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়, কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, দয়াময় সিংহ উচ্চ বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ।
সরকারি ঘোষণার পর থেকেই কমলগঞ্জের ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি মাদ্রাসা, ৮টি জুনিয়র বিদ্যালয়, ৪টি কলেজ ও ৩০টি কেজি স্কুল খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার, শ্রেণি কক্ষ পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীরের ভেতরও বাহিরের ঝোঁপ ঝাড়ও পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। অফিস, শিক্ষক কক্ষ, প্রাঙ্গণ সবই জীবানু নাশক ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, ভান্ডারীগাঁও উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খুরশেদ আলী বলেন, সরকারি ঘোষণার পর শিক্ষা বিভাগ থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে বিদ্যালয়কে জীবানুমুক্ত করে শিক্ষা উপযোগী করে রাখার জন্য সকল প্রস্তুতি নিতে। তবে ইতি মধ্যে আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে এরই মধ্যে আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে মাক্স, হ্যান্ডসেনিটাইজার, তাপমাত্রার মেশিন ও ১টা আলাদা আইসোয়েলেসনের জন্য রুম ঠিক করে রেখেছি। তাছাড়া আমরা স্কুল প্রদান গেইটের পাশাপাশি আরো দুইটা গেইট করে রেখেছি। যাতে করে ছাত্র ছাত্রীরা স্বাভাবিক ভাবে স্কুলে গাধাগাধি অবস্থা না করে ঢুকতে পারে।
সরকারি ঘোষণার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতি রাখার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তালুকদার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন নাহার পারভীন বলেন, আগামী ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা উপযোগী করে প্রস্তুত রাখতে সকল ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্কংল প্রধানদের। তবে তারা ঠিক মতো সরকারি আইন মানছে কি না তা নজরদারিতেও রাখা হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, সরকারি নির্দেশনামত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত কিনা ও সে নির্দেশনা মত পরিচালিত হবে কিনা সেদিকে উপজেলা প্রশাসন কঠোর নজরদারি করছে।