কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় ২৪ ঘন্টায় দিনে রাতে ১৬ ঘন্টাই লোডশেডিং করা হচ্ছে। লোডশেডিং-এ কারনে উপজেলার প্রায় ২৩ চা বাগানে চা উৎপাদন হ্রাসের আশংকা দেখা দিয়েছে। ব্যাংকিং ও স্বাস্থ্য সেবায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া উপজেলার ৬৮ হাজার গ্রাহকের সাথে দিনের বেলা লোডশেডিং হলেও রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় লোডশেডিং সাধারণ মানুষজন সহ্য করতে পারছেন না।
মাধবপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান মুন্না বলেন, মাধবপুর চা বাগানে প্রায় প্রতিদিন ১০হাজার কেজি কাঁচা চা পাতা চয়ন করা হয়। বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোড শেডিং এর কারনে প্রতিদিনের চয়নকৃত কাঁচা চা পাতা থেকে ৪ হাজার কেজি চা পাতা প্রক্রিয়াজাত করা গেলে ও বাকি ৬ হাজার কেজি কাঁচা চা পাতা বিনষ্ট হচ্ছে। এতে করে বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতি সম্মুখিন হতে হচ্ছে। তা ছাড়া চায়ের বার্ষিক উৎপাদন হ্রাস হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সুজা মেমোরিয়াল কলেজের ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক শাহজাহান মানিক, হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সালাহউদ্দীন তফাদার বলেন, সকাল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত দিনে রাতে ২৪ ঘন্টায় এক ঘন্টা অন্তর করে ১৬ ঘন্টা লোড শেডিং করা হচ্ছে। তা কোনভাবে সহনীয় নয়। এতে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার খুবই কষ্ট হচ্ছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থী ফারহানা রহমান বলেন, এত বেশী লোডশেডিংএ তারা স্বাভাবিক ভাবে পড়াশুনা করতে পারছে না।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এম মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, বিদ্যুৎতে লোড শেডিং এর কারনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে। সোনালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখা ব্যবস্থাপক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার রিপন মজুমদার ও পূবালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখা প্রধান বলেন, বিদ্যুৎতে লোড শেডিং এর কারনে স্বাভাবিক ব্যাংক সেবা বিঘ্নিত করছে। এখন প্রতিদিন জেনারেটারে গড়ে ১ হাজার টাকার তেল পুড়িয়ে ব্যাংক সেবা স্বাভাবিক রাখা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ গ্রাহক হচ্ছেন ৬৮ হাজার। ৬৮ হাজারে গ্রাহকের দিনে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৫ মেগাওয়াট। আর রাতে চাহিদা ১৯ মেগাওয়াট। বর্তমানে কমলগঞ্জে দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় মাত্র ৫ মেগাওয়াট আর রাতে ১০ মেগাওয়াট। কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন ৩ টি সাব স্টেশন আছে। তিনটি সাব স্টেশনে ৩টি ফিডারে এক ঘন্টা অণÍর করে লোড শেডিং করতে হচ্ছে। কমলগঞ্জে চাহিদার চেয়ে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ পেলে লোড শেডিং অনেক কমে যেত বলে আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানায়।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহা ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মীর গোলাম ফারুক বলেন, সরকারি নির্দেশনা ও তাদের চাহিদার তুলনায় যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে এভাবে লোড শেডিং করা হচ্ছে। এখানে স্থানীয়ভাবে কিছু করার নেই।