কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ দীর্ঘদিন প্রেম করার পর অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েন প্রেমিকা। তাই বিয়ের দাবী জানিয়ে ঘরে তুলে নিতে গত ৫ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়ির বারান্দায় অবস্থান নিয়েছে। এদিকে অবস্হা বেগতিক দেখে বাড়ি ছেড়েছেন প্রেমিক। এদিকে জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন আলোচনার পরও কোন সমাধান করতে পারছেন এঘটনার। প্রেমিকাও অনড় অবস্থানে প্রেমিকের বসত ঘরের বারন্দায় অবস্থান নিয়ে বসে আছেন। ঘটনাটি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানের আদমটিলা শ্রমিক বস্তিতে। প্রেমিকা জ্যোতি রবিদাস (১৯) গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে একই বাগানের শ্রমিক বস্তির প্রেমিক সন্তোষ যাদব (২২) এর বাড়িতে অবস্হান নিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, জ্যোতি রবিদাসের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল শ্রমিক বস্তির সন্তোষ যাদবের। সন্তোষ যাদব প্রেমিকা জ্যাতিকে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করলে ও অন্যত্র বিয়ের উদ্যোগ নিচ্ছে জেনে প্রেমিকা সোমবার সন্ধ্যা গিয়ে প্রেমিক সন্তোষের বাড়িতে অবস্থান নেয়। বিষয়টি টের পেয়ে প্রেমিক সন্তোষ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। সোমবার রাত থেকে কনকনে শীতের মাঝে প্রেমিকা জ্যোতি প্রেমিকের বসত ঘরের বারান্দায় অবস্থা নিয়ে এখনঅব্দী সে স্হানেই অবস্থানে রয়েছে। সন্তোষ যাদবের মা বাসন্তী আহির বলেন, হঠাৎ করে সোমবার সন্ধ্যায় এ মেয়েটি তার বসতঘরের বারিন্দায় বসে পড়ে। সে দাবী করছে ছেলে সন্তোষ দীর্ঘদিন ধরে তারা সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এখন তাকে বিয়ে করে ঘরে তুলতে হবে। বাসন্তী আহির আরও বলেন, ছেলে সন্তোষ সোমবার সন্ধ্যা থেকে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। অবস্থানকারী জ্যোতি রবিদাস বলেন, গত কয়েক বছর ধরে সন্তোষ যাদবের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এখন সে ২ মাসের অন্ত:সত্ত্বা। সন্তোষ ও তার পরিবারের লোকজন বিয়ের বিষয় শেষ করে তাকে ঘরে তুলে নিতে হবে। এটার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সে এ বাড়িতে অবস্থান করে থাকবে। সে আরও জানায়, শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটি ও পুলিশ কর্মকর্তারা ছেলের পরিবারের সাথে কথা বলে তাকে বাড়িতে ফেরাতে চেয়েছিলেন। তবে গত ৫ দিনেও সে বাড়ি ফিরে যায়নি। শমশেরনগর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত গোয়ালা বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য ছেলেকে বাড়িতে ফেরাতে তার পরিবার সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও শনিবার বিকাল পর্যন্ত ছেলেটি ফিরে আসেনি। তাই এ বিষয়ে কোন সমাধান করা যায়নি। শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমেদ বলেন, এই বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। আমি গত ৫ দিন ধরে সমজতা করার চেষ্টা করছি, কিন্তু অভিযুক্ত ছেলের অনুপস্থিতির কারণে ঘটনার সমাধান করা যাচ্ছে না, এবং ছেলের পরিবারও মানছে না। তবে এ ঘটনায় আজ শুনেছি মেয়ের পক্ষ থেকে থানায় একটা লিখিত অভিযোগ দিবে, লিখিত অভিযোগ দিলে হয়তো পুলিশ প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রেমিকা জ্যোতি রবিদাস লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।