কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া সড়কে ডাকাতরা গাছ ফেলে যানবাহনে ডাকাতি করেছে। সড়ক অবরোধ করে ২৫-৩০ জনের একটি মুখোশপড়া ডাকাতদল ১০মিনিটে ২০/২৫টি সিএনজি অটো, প্রাইভেট কার ও পিকআপের চালকও যাত্রীদের মারধর করে মুঠোফোন, ও নগদ টাকাসহ প্রায় ৫ লাখ মালামাল লুটে নিয়েছে বলে আক্রান্তরা অভিযোগ করেন। ডাকাতদের মারধোরে ৫জন যাত্রী আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রোববার রাত সাড়ে ১১টায় কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মুজিবের টিলা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। তবে স্থানীয়রা বলেন,কমলগঞ্জে এমন ঘটনা আগে কখনো হয়নি,এখন হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা চরম অবনতি বলে দাবী করছেন।
জানা যায়, রোববার রাতে ডাকাতের কবলে পড়া একাধিক ভুক্তভোগীরা জানায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে ২৫-৩০ জনের একটি ডাকাতদল প্রথমে এক এক করে গাড়ি থামাতে শুরু করে। এরপর ডাকাতদলের সদস্যরা মুখোশ পড়া অবস্থায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আটকে পড়া সিএনজি, প্রাইভেট কার,মাইক্রোবাস, ডায়না, পিকআপ যানবাহনগুলোতে হামলা চালায়। প্রায় ১০ মিনিটে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের মারধোর করে হাতে থাকা দামী মুঠোফোন, নগদ টাকাসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে নিরাপদে স্থান ত্যাগ করে। অনেক যাত্রী ও চালক মালামাল না দেয়ায় তাদেরকে গামছা দিয়ে হাতে পায়ে বেধেঁ রেখেছিল বলে ডাকাত আক্রান্ত ব্যবসায়ী আলাহ উদ্দীন জানান। তারা আরো বলেন, এমন ডাকাতি আগে কখনো হতো না।
সিএনজি চালক শফিক মিয়া বলেন সারা দিনে ১২শ টাকা রুজী করেছিলেন, চেয়েচিলাম ক্যান্সার রোগী মা এবং স্ট্রোক রুগী বাবার জন্য ঔষধ নিবো। কিন্তু পারিনি। রাতে কান্না করে করে বাড়ী চলে যাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক আক্রান্ত জানান, শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে সিএনজি অটোতে করে ফিরছিলেন। ঘটনাস্থলে এসে হঠাৎ দেখেন কিছু যানবাহন আটকরা আছে। এর মধ্যেই মুখোশ পড়া ২ জন আমার গাড়িতে হামলা চালায়। তারা হাতে থাকা মুঠোফোন ও সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র দিতে বলে। দা দিয়ে কুপ মারার ভয় দেখিয়ে সবকিছু নিয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টায় প্রথমে শ্রীমঙ্গল থানা ও পরে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে ডাকাতদল তার আগেই পালিয়ে যায়। পুলিশ সড়কে রাখা গাছ কেটে সরিয়ে রাত ১টায় আটকা পড়া যানবাহন নিজ নিজ গন্তব্য পৌছে দিতে সহায়তা করে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান ডাকাতির হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডাকাতি হওয়ার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে, এবং যাত্রী ও চালকরা যাতে নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কে পুলিশের টহল জোরদার বাড়ানো হয়েছে।