গঙ্গাদেবীর আরাধনার মধ্যদিয়ে কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের ১৯ তম কাত্যায়নী পূজা সম্পন্ন

প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০১৯
ছবি ধলাইর ডাক

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের ১৯ তম কাত্যায়ানী পূঁজা গঙ্গা স্নানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এই দিনটি উপলক্ষে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মাধবপুর চা বাগান সনাতনী ভক্তবৃন্দের আয়োজনে কার্তিক মাসব্যাপী ব্রত পালন শেষে রাত থেকে বাগানের বিভিন্ন মন্দিরে নাম কীর্তন শুরু হয় এবং মঙ্গলবার ভোর রাত থেকেই বিভিন্ন চা বাগানের কয়েক হাজার ভক্তরা গঙ্গা স্নান ও পূজার্চ্চনা করতে হীরামতি ধলাই নদীর তীরে সমবেত হয়। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গঙ্গা স্নান ও পূজার্চ্চনা চলে।

মঙ্গলবার সকালে চা শ্রমিকদের কাত্যায়নী পূঁজা আয়োজক কমিটির আমন্ত্রণে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু , মাধবপুর চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক প্রসেনঘোপ, বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ইউনিট কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আসহাবুর ইসলাম শাওন, ইউপি সদস্য কৃষ্ণলাল দেশওয়ারা,সাবেক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি দেওনারায়ন পাশি প্রমুখ।

সরজমিনে উপস্থিত হয়ে গঙ্গা পূঁজা উযয়াপন কমিটির সভাপতি শ্যামদাস পানিকা,সহ-সভাপতি সত্যনারায়ণ ভর, সাধারন সম্পাদক প্রতাপ ভর, অর্থ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ মুন্ডা, ইন্দ্রজিৎ নুনিয়া,সদস্য দাদু কাহার, নিমাই নুনিয়া ও শিউনারায়ণ নুনিয়ার সাথে আলাপকালে জানা যায়, ভগবত পুরাণ গ্রন্থের দশম স্কন্দের দ্বাবিংশ অধ্যায়ে কাত্যায়ানী ব্রেতর উল্লেখ আছে। এই কাহিনী অনুযায়ী, ব্রজের গোপীগণ কৃষ্ণকে পতিরূপে কামনা করে সমগ্র মাঘ মাস জুড়ে এই ব্রত করেন। এই একমাস তাঁরা কেবলমাত্র মশলাবিহীন খিচুড়ি খেতেন এবং সকাল বেলা নদীতে স্নান করে নদীতীরে মাটির কাত্যায়ানী মূর্তি গড়ে চন্দন, দীপ, ফল, পান, নবপত্র, মালা ও ধূপ দিয়ে দেবীর পূজা করা হয়।

এরপরই নদীতে স্নান করে ভক্তরা বাড়ী ফিরে যান। মনোমতো স্বামী প্রার্থনায় গত এক মাস ব্যাপী উপবাস করে কাত্যায়ানী ব্রত পালন করা হয়েছে। এই একমাস তাঁকে চন্দন, ধূপ, দীপ ইত্যাদি দিয়ে পূজা করা হয়েছে। আজ ভোর রাত থেকে স্নান করে ভিজা কাপড়ে খোদিত কাত্যায়নীর মূর্তি পূজা করেন হাজার হাজার চা শ্রমিক ভক্তরা পরে উপস্থিত সকল ভক্তবৃন্দের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৯ বছর যাবত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সরকারী সহযোগিতা পেলে অনুষ্ঠানের আরো ব্যাপকতা বাড়বে।