ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বর : শিশুরাই বেশি আক্রান্ত

প্রকাশিত: ৮:৫৫ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০১৯

ডেস্ক নিউজ: রাজধানীর পুরান ঢাকার সাতরওজা এলাকার গৃহবধূ সুমি আক্তার আজ (রোববার) সকাল ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগের টিকিট কেটে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছেন। অসুস্থ তিন বছরের শিশুকন্যা রোজাকে ডাক্তার দেখাবেন। লম্বা সিরিয়াল, এক ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু সিরিয়াল পাননি। ছোট্ট একটি কক্ষে আরও অনেক অসুস্থ শিশুর অভিভাবকের উপস্থিতির কারণে গরমে কোলের শিশুটি গা এলিয়ে দিয়েছে মায়ের ঘাড়ে।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সুমি আক্তার বলেন, গত দুদিন ধরে মেয়েটার প্রচণ্ড জ্বর। সেই সঙ্গে কাশি ও বমি হচ্ছে। সদাচঞ্চল মেয়েটি ক্রমেই নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। এখন ডাক্তার দেখাতে অপেক্ষা।

শুধু সুমি আক্তার নয়, ঢামেক শিশু বহির্বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী অসুস্থ শিশুদের নিয়ে অসংখ্য অভিভাবক ডাক্তার দেখাতে লাইনে দাঁড়িয়ে কিংবা বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করছেন। প্রায় সবারই জ্বর, সেই সঙ্গে মাথাব্যথা ও কাশি। শুধু শিশুদেরই নয়, মেডিসিন বিভাগেও বিভিন্ন বয়সী পুরুষদের লম্বা সিরিয়াল দিয়ে ডাক্তার দেখাতে দেখা যায়।

ঢামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রাজেশ মজুমদার জানান, এখন ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বর হচ্ছে। জ্বর, মাথাসহ সারাশরীর ব্যথা এবং কারও কারও বমি হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের জ্বর বেশি হচ্ছে।

তিনি জানান, ঢামেক হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগে কয়েকদিন আগেও গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ রোগী হলেও বর্তমানে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী আসছে। যত রোগী আসছে তার শতকরা ৬০ ভাগ ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত। রোগীভেদে জ্বর ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যায়। রোগীর মাথাব্যথাসহ বমি হয়। ভাইরাস জ্বরের রোগী সাধারণত তিনদিনেই ভালো হয়ে যায়।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে খুব প্রয়োজন না হলে শিশুদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, শিশুদের তরল পানীয় জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণ খাওয়াতে হবে। ঘাম হলে পাতলা সুতি কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে।

চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি বলেন, অনেক অভিভাবক দু-একদিন অপেক্ষা না করেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ানো শুরু করেন। এতে হিতে বিপরীত হয়। জ্বর হলে প্রথমত শুধু প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন তিনি।

রাজধানীর লালবাগ এলাকার বাসিন্দা হাফিজ আলম বলেন, তার পরিবারের ছোট-বড় সবাই জ্বরে আক্রান্ত। জ্বরের সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা হয়। প্রচণ্ড গরমের কারণে এমনটা হচ্ছে বলে ধারণা তার।