চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ৮:৩১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২০
ফাইল ছবি

ধলাই ডেস্ক: নভেল করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে অতিরিক্ত কেনাকাটার কারণে বাজারে চালের দাম হঠাৎ অনেকটাই বেড়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। চালের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তাই অসাধু চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে। চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার। এই অভিযান আরও জোর করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সঙ্গে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনও চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে অভিযান পরিচালনা করবে। ইতোমধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে মাঠ প্রশাসনকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে মানুষ চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য বেশি পরিমাণে কিনে মজুত করতে শুরু করেছে। এই সুযোগে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কেজি প্রতি চালের দাম ২ থেকে ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, অভিযান পরিচালনা করা ছাড়াও ওএমএসের (খোলা বাজারে বিক্রি) মাধ্যমে চাল বিক্রি শুরু হচ্ছে। করোনার কারণে চালের সঙ্কট দেখা দিলে প্রয়োজনে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘দেশে চালের কোনো সঙ্কট নেই। আমরা ওএমএস ডিলারদের চাল নিয়ে বাজারে বিক্রি করার জন্য বলেছি। রোববার ডিলারদের বলা হবে তারা যদি তিনদিনের মধ্যে চাল তুলে বিক্রি না করেন তবে ডিলারশিপ বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হবে।’

হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলছে বলেও জানান মন্ত্রী।

চালের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। একেবারে অযৌক্তিকভাবে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। যারা দাম বাড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানা শুরু হয়ে গেছে। সাভারে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা একইসঙ্গে জেল দেয়া হয়েছে। আশা করছি, ইচ্ছা মত দাম বাড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে।’

‘যারা কোন কারণ ছাড়া চালের দাম বাড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে। শুধু আমরাই জোরদার করব না, ভোক্তা অধিদফতর, জেলা-উপজেলা প্রশাসনও অভিযান পরিচালনা করবে’ বলেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘মানুষ বেশি বেশি জিনিসপত্র কেন কেনে আমি বুঝি না। আমরা আসলে সচেতন নই। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মাঠ পর্যায়ে ডিসি, ইউএনওরা মিটিং করছেন, ঢাকায় আমরা তো বলছিই। আমাদের সচেতন হতে হবে। কেউ একসঙ্গে বেশি পরিমাণ চাল কিনবেন না।’

সরকারের খাদ্যশস্যের মজুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সরকারি গুদামে সাড়ে ১৭ লাখ টনের মতো খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এরমধ্যে ১৫ লাখ টনের মতো চাল রয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ দিনের মধ্যে হাওর এলাকার বোরো ধান কাটা শুরু হবে। এক মাস আটদিনের মধ্যে সারাদেশের বোরো ধান উঠে যাবে। তাই চালের সঙ্কট কিংবা দাম বাড়ার কোনো কারণই নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে আরও অপশন আছে। আমি চাল আমদানি করতে পারি। কিন্তু আমি যদি চাল আমদানি শুরু করি তবে দেখা যাবে কৃষক বোরোতে দাম পাচ্ছে না। অবস্থা বুঝে আমরা ব্যবস্থা নেব।

সূত্র: জাগো নিউজ….