ঢাকায় বসে নরসিংদীতে পরীক্ষা, এমপি বুবলী বহিষ্কার

প্রকাশিত: ১০:৩৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
ছবি সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ পরীক্ষা ভাড়াটে ছাত্রী দিয়ে দিতে গিয়ে ধরা পড়লেন নরসিংদী সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তামান্না নুসরাত বুবলী। এমপি বুবলি ঢাকায় থেকে নরসিংদীতে ৮ জন ভাড়াটে ছাত্রী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পর একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিকদের হাতে ধরা পড়ে যান।

সাংবাদিকরা ভাড়াটে ছাত্রীকে তার নাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রথম নিজের নাম তামান্না নুসরাত বুবলী বলে দাবি করেন। পরে সাংবাদিকরা চ্যালেঞ্জ করলে তিনি তার আইডি কার্ড দেখাতে ব্যর্থ হন। এ সময় ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় প্রক্সি পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রী পরীক্ষার হল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান।

এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এমপি বুবলীকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হন। এর আগে ঘটনা জানার পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ বুবলি ও তার লোকজনের ভয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেননি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, ভাড়াটে ছাত্রীরা তাদের আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে মর্মে জিডির কপি নিয়ে আসার কারণে তারা এমপি বুবলির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি।

একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, বুবলির এপিএস কিছু সন্ত্রাসীকে নিয়ে পরীক্ষার দিন কলেজ চত্বরে এসে বসে থাকতেন। তাকে সহযোগিতা করতেন স্থানীয় চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের একজন সচিব। স্থানীয় লোকজন এসব ঘটনা জানলেও মুখ খুলতে সাহস পাননি।

এমপি বুবলী নিহত নরসিংদীর সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেনের স্ত্রী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় বুবলী উল্লেখ করেন, তিনি এইচএসসি পাস। পরে উচ্চশিক্ষা অর্জনে তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ কোর্সে ভর্তি হন।

জাতীয় সংসদের একজন এমপি হয়ে তিনি বিএ পাস করার জন্য অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ কোর্স পর্যন্ত চারটি সেমিস্টার ও ১৩টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও তিনি একটিতেও অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু তার পক্ষে এখন পর্যন্ত ৮ জন নারী পরীক্ষা দিয়েছেন।

পরীক্ষার হল পরিদর্শক জানিয়েছেন, এমপি বুবলির পক্ষে পরীক্ষা দিতে আসা নারী দাবি করেছেন, তার আইডি কার্ড হারিয়ে গিয়েছে। তিনি জিডির কপি নিয়ে আসেন। তাই তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়।

এসব বিষয়ে জানতে এমপি বুবলির নম্বরে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে নরসিংদী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ উল্লাহ কাজলকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।